জিও প্ল্যাটফর্মের ডিরেক্টর অন বোর্ড অনন্ত আম্বানি কেন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই বনতারা? এই প্রয়াসের পেছনে আসল উদ্দ্যেশ্য কি? তা নিজেই খোলসা করে জানালেন অনন্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই কেন্দ্রটি সেবালয় হিসাবে তৈরি করেছি। এটি এমন একটি এলাকা যেখানে আমরা কেবল বিপন্ন প্রজাতির পুনর্বাসন, উদ্ধার, সংরক্ষণ এবং প্রজননের উদ্দ্যেশ্যেই তৈরি।’’
advertisement
বনতারার বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় অনন্ত আম্বানি জানান কীভাবে তাঁর বাবা মুকেশ আম্বানি এবং মা নীতা আম্বানি তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছেন এই কাজে। রিল্যায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং রিল্যায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারপার্সন নীতা আম্বানি বনতারাকে গড়ে তুলতে সবসময় উত্সাহ জুগিয়ে গিয়েছেন অনন্তকে। রিল্যায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রিল্যায়েন্স ফাউন্ডেশন দ্বারা সমর্থিত বনতারা।
“আমার বাবা আমার দেখা অন্যতম বন্যপ্রাণী প্রেমিক। ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, যখন আমরা ছোট ছিলাম, প্রায় ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছুটি কাটাতে প্রতিবার আমরা আফ্রিকা, রণথম্ভোর, বান্ধবগড়, কানহা এবং কাজিরাঙার জঙ্গল ছাড়া কোথাও যাইনি। ছুটিতে বাবা প্রতিবার আমাদের জঙ্গলে বেড়াতে নিয়ে যেতেন। আমার মনে হয় এটিও আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। তবে সত্যি বলতে কি, আমাদের দেশে প্রচুর মানুষ গৃহপালিত পশুদের পালনে উজ্জ্বল নিদর্শন তুলে ধরেছেন।’’
মা নীতা আম্বানি সম্পর্কে বলতে গিয়ে অনন্ত বলেন, ‘‘আমার মা, বেশিরভাগই আমাদের প্রথম হাতি গৌরীকে উদ্ধার করেছিলেন। এবং আমার মা, যেমন আপনি জানেন, আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আমি মনে করি গৌরী আমাদের পরিবারের মধ্যে প্রিয়। এবং আমার দাদার ছেলে, পৃথ্বী, ওর একমাত্র ছুটির ঠিকানা জামনগর। তাই আমাদের পুরো পরিবারের ছুটি কাটাবার জায়গাই হল জামনগর। আমরা অন্য কোথাও যাই না।’’ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে হিন্দু ধর্মও, বলেন অনন্ত।
‘‘রাধিকাও এই বিষয়েও অত্যন্ত উত্সাহী। আমরা দুজনেই এবং আমার বাবা-মায়ের আশীর্বাদ এবং আমার দাদা-দিদি আকাশ এবং ঈশার আশীর্বাদ নিয়ে এই কাজ করছি। আমি মনে করি আপনি যা দেখেছেন তা আমার দৃষ্টিভঙ্গির মাত্র ৮-১০ শতাংশ।” পরিবারের ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন অনন্ত আম্বানি।
“আমার কারণকে চালিত করে এমন কিছু হল প্রাণী কল্যাণ। অনেক লোক মানব কল্যাণের জন্য কাজ করছে কিন্তু প্রাণী কল্যাণে, খুব কম জনেই কাজ করছে। আমি মনে করি আমি নির্বাচিত একজন এবং আমি ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেয়েছি… যে আমি প্রাণীদের সেবা করতে পারি। আমার জন্য, আজকের জীবনে, আপনি ঈশ্বরকে দেখতে পাবেন না, কিন্তু আমি প্রতিটি প্রাণীর মধ্যে ঈশ্বরকে দেখি।’’
‘‘আমি নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি, নিজের স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। সব বাধা কাটিয়ে উঠেছি। আমি মনে করি যে প্রাণীগুলিকে উদ্ধার করেছি এসব তারই আশীর্বাদের ফল। সবচেয়ে বড় কথা হল সমাজে কোনও না কোনও একটি অবদান রাখতে পারছি’’, এদিন বলেন অনন্ত। “আমার ইচ্ছে জামনগরের বনতারাকে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত বন্যপ্রাণী ইনস্টিটিউট করতে চাই। অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিপন্ন প্রজাতিগুলিকে সংরক্ষণ এবং প্রজনন করতে চাই যাতে আমরা তাদের আবাসস্থলে ফিরিয়ে দিতে পারি।’’