আদালত স্পষ্ট জানায়, ওই মহিলা বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে অন্য একজনের সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে রয়েছেন, তা আইনের চোখে অপরাধ৷ ফলে ওই মহিলা এবং তাঁর লিভ ইন সঙ্গীকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷
বিচারপতি বিবেককুমার সিং বলেন, ‘হিন্দু বিবাহ আইনের অধীনে বিবাহিত কোনও নাগরিক অবৈধ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আদালতের কাছে নিরাপত্তা চাইতে পারেন না৷’ আবেদনকারী মহিলাকে আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে যদি সম্পর্ক খারাপ হয় সেক্ষেত্রে প্রথমে স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতে হবে৷
advertisement
বিচারপতি রায় দিতে গিয়ে বলেন, ‘এ দেশের সামাজিক বুননের সঙ্গে আপোস করে লিভ ইন সম্পর্কে মান্যতা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷ পুলিশকে যদি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিই, তাহলে তা এই অবৈধ সম্পর্কে সম্মতি দেওয়া হয়ে যাবে৷’
সোনম নামে এক মহিলার আবেদনে গত ৭ নভেম্বর এই নির্দেশ দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট৷ পুলিশ যাতে তাঁর লিভ ইন সম্পর্কে হস্তক্ষেপ না করে তাঁদের নিরাপত্তা দেয়, সেই আবেদনই করেছিলেন ওই মহিলা৷ ওই মহিলার যুক্তি ছিল, তিনি এবং তাঁর লিভ ইন পার্টনার দু জনেই প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বেচ্ছায় একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তাঁর স্বামী তাঁদের নিয়মিত হুমকি দিয়ে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনে অসুবিধা সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ করেন ওই মহিলা৷
নিজের লিভ ইন সম্পর্কের কথা জানিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সাহারানপুর থানায় নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে হয়রানি করার অভিযোগও দায়ের করেছিলেন ওই মহিলা৷ যদিও রাজ্যের আইনজীবী আদালতকে জানান, ওই মহিলা এখনও বিবাহিত এবং স্বামীর থেকে ডিভোর্স নেননি৷ কয়েকদিন আগে গত ৩০ অক্টোবরই তিনি আদালতে ডিভোর্স চেয়ে মামলা করেছেন৷ তাও আবার আদালত ডিভোর্সের নথি দেখতে চাওয়ার পর তিনি সেই মামলা করেন৷ যদিও এখনও আদালত ডিভোর্সের কোনও নির্দেশ দেয়নি৷ রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়, গত দু বছর ধরে লিভ ইন সম্পর্কে রয়েছেন ওই মহিলা৷ কিন্তু তাঁর স্বামী তাঁদের হুমকি দিয়েছেন অথবা হেনস্থা করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷
সব শুনে আদালত জানায়, যেভাবে ওই মহিলা লিভ ইন সম্পর্কে রয়েছেন তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ এবং ৪৯৫ নম্বর ধারায় প্রথম স্বামী থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে অথবা প্রথম বিয়ের কথা গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে৷ আদালতের পুরনো রায়ের উদাহরণ দিয়ে বিচারপতি আরও বলেন, আইনের চোখে যে কোনও পুরুষ এবং মহিলা চাইলেই লিভ ইন সম্পর্কে থাকতে পারেন না৷ লিভ ইন সম্পর্কে তখনই নিরাপত্তা চাওয়া যেতে পারে যখন পুরুষ এবং মহিলা দু জনেই অবিবাহিত অথবা আইনি ভাবে পরস্পরকে বিয়ে করার উপযুক্ত৷
