বিহারের নওয়াদায় এক অদ্ভুত সাইবার জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। যা শোনার পর মাথায় হাত সকলের। আসলে এখানকার কিছু ঠগ ‘All India Pregnant Job’ নামে একটি নতুন কোম্পানি তৈরি করেছে। এই কোম্পানির মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে জালিয়াতির ব্যবসা চালাচ্ছিল তারা।
গোটা বিষয়টি:
বিহারের নওয়াদা জেলায় একটি চক্র সক্রিয় ছিল। তারা ‘All India Pregnant Job’ নামে একটি কোম্পানি চালাতো। সেখানে সুন্দরী মহিলাদের নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করতো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ট্রেন্ডিং করতো। আর এই বিজ্ঞাপনগুলি দেখে কর্মহীন যুবক-যুবতীরা ভাবতেন যে, এটি একটি দুর্দান্ত অফার। আর এই ভুল করেই তাঁরা ফাঁদে পা দিতেন। যাঁরা ৫ লক্ষ টাকা আয় করার উদ্দেশ্যে এই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন ফি, ডকুমেন্টেশন দিতে হয়েছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: সোম বিকেলে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ খড়গপুরে! ভয়াবহ মৃত্যু এক জনের! গোটা এলাকায় আতঙ্ক, কী ঘটল জানেন?
পেশাদার পদ্ধতিতে জালিয়াতি:
‘All India Pregnant Job’ নামের সংস্থাটি জানিয়েছিল যে, মা হতে অক্ষম মহিলাদের গর্ভধারণে সহায়তা আসলে একটি সমাজসেবা। এর বিনিময়ে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরষ্কার দেওয়া হবে। বেশিরভাগ বেকার যুবক এবং ছাত্ররা এর ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। পুলিশ সেই সূত্র পেয়ে এসপি অভিনব ধীমানের নির্দেশে সাইবার ডিএসপি প্রিয়া জ্যোতির নেতৃত্বে একটি এসআইটি গঠন করা হয়েছিল।
দলটি অভিযান শুরু করে এবং ৪ জনকে আটক করা হয়। প্রধান অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়। প্রধান অভিযুক্ত রাজেশ কুমার (২৬) রোহ থানা এলাকার কুঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা। তার সঙ্গে তিন জন নাবালককেও আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ এবং ১৬ বছর বয়সী দুই কিশোর রয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ফোন এবং একটি কি-প্যাড উদ্ধার করেছে। সাইবার থানায় বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিষয়টিকে আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পার্ট-টাইম চাকরির নাম করেও প্রতারণা:
পুলিশ যখন প্রধান অভিযুক্ত-সহ অনেককে পাকড়াও করে, তখন জানা যায় যে, কেবল ‘All India Pregnant Job’-এর নামেই নয়, বড় বড় টেলিকম কোম্পানিতে পার্ট-টাইম এবং ফুল-টাইম চাকরি দেওয়ার নাম করেও প্রতারণা করা হত। এর জন্য বিজ্ঞাপনও দেওয়া হত এবং সিভি চেয়ে পাঠানো হত। এরপর প্রতারকরা এই প্রতিশ্রুতি দিত যে, ঘরে বসে ২২,৫০০ থেকে ৭৫,৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যাবে। বাড়িতে বসে কাজ করে বিপুল অর্থ আয়ের বিজ্ঞাপন দেখে যুবক, মহিলা, ছাত্র এবং বেকাররা সহজেই সেই ফাঁদে পা দিত। আর প্রতারকদের জালে পা দিলেই রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং মোবাইল, ল্যাপটপ দেওয়ার জন্য সিকিউরিটি মানির নাম করে হাজার হাজার টাকা প্রতারণা করা হত।