এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলী উঠছে আর সেই মাঝখান থেকেই সাদা টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি—বিশ্বাস কুমার রমেশ—বাঁ হাতে ফোন ধরে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসছেন। স্থানীয়রা তাঁকে দেখে চিৎকার করে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই ভাবতেও পারছেন না, ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে থেকেও কীভাবে কেউ বেঁচে থাকতে পারেন! কারণ বিমানটিতে ১.২৫ লক্ষ লিটার জ্বালানী ছিল, যা বিস্ফোরণের পরে তাপমাত্রাকে ভয়ানক উচ্চতায় পৌঁছে দেয়, আশপাশের পশুপাখিও সেদিন প্রাণ হারায়। কিন্তু বিশ্বাস অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান।
advertisement
দুর্ঘটনার দিনই আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় বিশ্বাস খানিকটা কাঁপতে কাঁপতে বাইরে বেরিয়ে আসছেন এবং গুজরাটি ভাষায় চিৎকার করছেন: “প্লেন ফাট্যো ছে!” (বিমান ফেটে গেছে!) তাঁর শরীরে আঁচড় ও পোড়ার চিহ্ন স্পষ্ট ছিল।
‘আমি কীভাবে বাঁচলাম এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না’ বিশ্বাস কুমার রমেশ, যিনি এআই-১৭১ ফ্লাইটের একমাত্র জীবিত যাত্রী, বলেন—“এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আমি কীভাবে বেঁচে আছি। আমার চোখের সামনে সবাই মারা গেল। এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল আমি আর বাঁচব না, কিন্তু হঠাৎ চোখ খুলতেই দেখি আমি জীবিত।” তিনি আরও বলেন, “আমি সিটবেল্ট খুলে কোনওরকমে দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসি। আমার চোখের সামনেই এয়ার হোস্টেস, আঙ্কেল-আন্টিরা প্রাণ হারালেন।”
সিট নম্বর ১১-এ-তে ছিলেন বিশ্বাস কুমার রমেশ ছিলেন বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানের ইকোনমি ক্লাসের প্রথম সারির জানালার ধারে, সিট নম্বর ১১এ-তে। এ সিটটি ছিল বিমানের জরুরি দরজার একেবারে পাশে। বিমানে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যার মধ্যে ১২ জন ছিলেন ক্রু সদস্য। প্লেনটি রানওয়ে ২৩ থেকে দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে উড়েছিল।
‘যেখানে বসেছিলাম, সেখানকার অংশটা মাটিতে পড়ে গিয়েছিল’ বিশ্বাস বলেন, “আমি যেখানে বসেছিলাম, সেই অংশটা হোস্টেলের দিকে না গিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। ফলে আমি দুর্ঘটনাস্থল থেকে দূরে সরে যেতে পেরেছিলাম। দরজা খুলতেই আমি দৌড়ে বেরিয়ে আসি। আমার বাম হাত পুড়ে গেছে, তবে এখন আমি ভালো আছি এবং সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছি।”
মূলত দমন-দিউ’র বাসিন্দা, বর্তমানে লন্ডনের কাছে লিসেস্টারে থাকেন বিশ্বাস কুমার রমেশ মূলত দমন ও দিউ থেকে এসেছেন এবং বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লিসেস্টার শহরে বসবাস করেন, যা লন্ডন থেকে প্রায় ১৪০ কিমি দূরে।
২৪২ যাত্রীর মধ্যে একমাত্র জীবিত ছিলেন বিশ্বাস কুমার রমেশ, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫২ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ানসহ মোট ২৪১ জন মারা যান। শুধু বিশ্বাস কুমার অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান।
পাইলট পাঠিয়েছিলেন জরুরি বার্তা, তার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ডিজিসিএ-র মতে, দুর্ঘটনার আগে পাইলট জরুরি বার্তা পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু তার পর এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।