মাত্র চার বছর বয়সে আচটাউম, কানি, এবং মিনাকে বারকিনা ফাসো থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল তিউনিশিয়ার ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানা ফ্রিগুইয়া পার্কে। তারপর ২৩ বছর ধরে চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ ছিল তারা। ইদানীং আর্থিক সংকটে পড়েছেন চিড়িয়াখানার মালিক। হাতিদের খাবার, এবং চিকিৎসা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ‘বনতারা’-এর প্রতিষ্ঠাতা অনন্ত আম্বানির সাহায্য চান চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। অনন্ত দেরি করেননি। কোল পেতে দিয়েছে ‘বনতারা’-ও।
advertisement
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল, দীর্ঘদিনের বন্দিদশা এবং মানুষের উপর নির্ভরশীলতার কারণে হাতিদের আর জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব নয়। সেটা ঠিক হবে না। তখন তাঁরা এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজতে শুরু করেন, যেখানে হাতি তিনটি জীবনধারণের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা পাবে। শান্তিতে থাকতে পারবে। খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে শরীরের যত্ন, কোনও কিছু নিয়েই ভাবতে হবে না। শেষপর্যন্ত ‘বনতারা’-কেই তাঁরা হাতিগুলির জন্য উপযুক্ত স্থান হিসাবে বেছে নেন।
ইতিমধ্যেই তিনটি হাতির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন ‘বনতারা’-এর পশু চিকিৎসকরা। দেখা গিয়েছে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে তারা। ত্বকের সমস্যার কারণে লোম উঠে গিয়েছে। চামড়া হয়ে গিয়েছে স্বাভাবিকের তুলনায় মোটা। তাদের নিয়মিত চিকিৎসা প্রয়োজন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আচটাউমের একটা দাঁত ফেটে গিয়েছে। মিনার দাঁতে সংক্রমণ হয়েছে। এটা শুধু ওষুধে সারবে না, অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে। কানির নখ ফেটে গিয়েছে। সম্ভবত শক্ত মেঝেতে দীর্ঘদিন দাঁড়িয়ে থাকার কারণেই এমন অবস্থা। চিড়িয়াখানায় কংক্রিটের একটি ঘরই ছিল তাদের বাসস্থান। কিন্তু সেই ঘরে বাতাস চলাচল করে না বললেই চলে। তবে একটি খোলা মাঠেও তাদের নিয়ে যাওয়া হত বলে জানা গিয়েছে। সোজা কথায়, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে ভুগছে তারা। খাবার বলতে শুধু শুকনো খড়। পরিস্কার পানীয় জলও সবসময় মেলে না।
আরও পড়ুন : দার্জিলিঙের পাকদণ্ডিতে টয় ট্রেনের ভেতরে এসব কী! এলাহি ব্যাপার! জানলে দু’ চোখ কপালে উঠবে
মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার বনাঞ্চলেই এই হাতিদের দেখা মেলে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পরিবেশেও বেড়ে ওঠে তারা। তিউনিশিয়ায় এই প্রজাতির দেখা পাওয়া যায় না। যাইহোক, এদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন বিস্তীর্ণ বনরাশি। যেখানে বিভিন্ন রকমের গাছের পাতা খেয়ে তারা জীবনধারণ করতে পারে। কাদামাটির পুকুরে গাঁ ডুবিয়ে নিতে পারে ত্বকের যত্ন। ‘বনতারা’-য় এই সমস্ত সুবিধাই রয়েছে। এখন নতুন বাড়িতে হেসেখেলে শান্তিতে কাটাতে পারবে আচটাউম, কানি, এবং মিনা।