যদিও অধীর চৌধুরীর এই অভিযোগকে গুরুত্বই দিতে চাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বস্তুত কলকাতায় ফিরে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর নাম শুনেই বিরক্তি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন: ‘সত্যিটা বলুন’, মমতার অভিযোগের জবাবে মুখ খুললেন নির্মলা! নীতি বৈঠক নিয়ে চাপানউতোর তুঙ্গে
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে বেরিয়ে অভিযোগ করেন, বক্তব্য রাখার সময় পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
advertisement
মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ শুনে নয়াদিল্লিতে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কী করবেন, তা পূর্ব পরিকল্পিত। কী কী হবে তার ইঙ্গিত উনি আগে থেকেই দিয়েষছিলেন। নীতি আয়োগের বৈঠকে যাবেন, বলতে দিলে কী করবেন, না বলতে দিলে কী করবেন, সব ঠিক করা ছিল। আর সেই মতো নাটকের উপস্থাপনা সমান সমান হয়েছে। জাতীয় ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধির উত্থান ওঁর মনে এক অদ্ভুত ঈর্ষার জন্ম দিয়েছে। তাই জাতীয় মঞ্চে চর্চায় থাকার জন্য এটা করেছেন। উনি তো রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রীকে যদি বলতে না দেওয়া হয়, তাহলে আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্র কাঠামোর উপরে সবচেয়ে বড় অন্যায়। তাহলে উনি শুধু মাইকে বলছেন কেন? সুপ্রিম কোর্টে যান না, ধরনায় বসুন। পশ্চিমবঙ্গে নাটকের অনুকরণ উনি দিল্লিতে করছেন।’
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, বিরোধী শিবিরের প্রতিনিধি হয়ে তিনি নীতি আয়োগের বৈঠকে গিয়েছিলেন৷ এই প্রসঙ্গে অধীর বলেন, ‘ওঁকে তো কেউ বলেননি প্রতিনিধিত্ব করতে। গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল। নীতি আয়োগের মিটিংয়ে কে মাইক চালাল, কে বন্ধ করল? সেসব কিছুই জানি না। একজন মুখ্যমন্ত্রীর মাইক কেউ বন্ধ করে? ভিডিও রেকর্ডিং তো থাকে। সেটা সামনে আনতে সুপ্রিম কোর্টে যান। উনি পরে বলতেও পারেন, ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। উনি সব বলতে পারেন।’
এ দিন কলকাতায় ফেরার পর অধীর চৌধুরীর মন্তব্যে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রীতিমতো বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাচ্ছিল্যের সুরে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘ছাড়ুন তো, যত্তসব৷’
যদিও অধীর চৌধুরীকে কড়া জবাব দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ৷ অধীরকে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, ‘অধীর চৌধুরী তৃতীয় হয়েছেন। উনি হাস্যকর কথা বলছেন। রাহুল গান্ধি নবজাতক শিশু নন। কখন কোথায় থাকেন, সেটা নিয়েই তাঁর দল চলে। তাঁকে তুলতে বা কোণঠাসা করতে যাবে কেন তৃণমূল? অধীরবাবু বিজেপির উদ্দেশ্য পূরণ করছেন। অধীরবাবু মনে রাখবেন আপনি তৃতীয় হয়েছেন। আসলে হতাশার বহিঃপ্রকাশ থেকে কথা বলছেন। সার্বিক অসহায়তার বহিঃপ্রকাশ। এমন কি, ওনার হয়ে প্রচারে দিল্লির নেতাও আসেনি।’
প্রসঙ্গত লোকসভা নির্বাচন পর্বেও তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বার বার সংঘাতে জড়িয়েছিলেন অধীর৷ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়ার জন্য আবার অধীরকেই দায়ী করেছিল তৃণমূল৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য তৃণমূলের ইউসুফ পাঠানের কাছেই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হন অধীর৷