পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম অরুণ রাজপুত। ইনস্টাগ্রামে ৫২ বছর বয়সী ওই মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছিল অরুণ। এরপর প্রায় দেড় বছর ধরে সেখানেই চলত কথাবার্তা। তারপর ফোন নম্বরও আদানপ্রদান হয়। এদিকে ওই প্রৌঢ়া নিজেকে কমবয়সী দেখাতে ইনস্টাগ্রামের ফিল্টার ব্যবহার করতেন।
advertisement
পুলিশ আরও জানিয়েছে, মাস দুয়েক আগে ফারুখাবাদের একটি হোটেলে প্রথম তাঁদের সামনাসামনি দেখা হয়। অরুণ রাজপুত নিজের প্রেমিকাকে সামনে দেখে রীতিমতো তাজ্জব বনে গিয়েছিল। কারণ তার মনে হয়েছিল যে, প্রেমিকার বয়স অনেকটাই বেশি। এরপর মহিলাও অরুণকে বলেন যে, তাঁর বয়স ৫২ বছর। যদিও তাতে একেবারেই কোনও রকম প্রতিক্রিয়াই দেখা যায়নি অরুণের মধ্যে। বরং মাথা ঠান্ডা রেখে মহিলার কাছ থেকে টাকা হাতানোর ছক কষে ফেলে সে। যে-ই ভাবা, সে-ই কাজ। ফলে প্রেমিকাকে বুঝিয়ে তাঁর থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা ধার নেয় অরুণ।
এদিকে মহিলাও নাছোড়বান্দা। তিনি বিয়ের জন্য অরুণের উপর চাপ দিতে শুরু করেন। তবে বিয়ে করতে বেঁকে বসে অভিযুক্ত। তাতে মহিলা রেগে গিয়ে ধার দেওয়া দেড় লক্ষ টাকা মিটিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু সেটাও না দিতে চাওয়ায় তিনি বারবার অভিযুক্তের উপর চাপ দিতে থাকেন। আর বারংবার চাপে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে অরুণ ওই মহিলাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করে। সেই ছক অনুযায়ী মহিলাকে মইনপুরিতে ডেকে পাঠায় সে। তারপর মহিলার পরনে থাকা ওড়নার ফাঁস দিয়েই তাঁকে খুন করে অরুণ। আবার খুনের পর মহিলার মোবাইল থেকে সিম কার্ড খুলে তা নষ্ট করে ফেলে এবং দেহটিকে একটি ঝোপের আড়ালে ফেলে দেয় অরুণ।
গত ১১ অগাস্ট ২০২৫ তারিখ নাগাদ মইনপুরির কোতওয়ালি এলাকার খারপারি রাজবাহার কাছ থেকে মহিলার পরিত্যক্ত দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। আর তাঁর দেহের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি মোবাইল ফোন। এদিকে দেহ শনাক্ত না হওয়ায় সেটিকে পরিত্যক্ত হিসেবে নথিভুক্ত করে দাহ কাজ সম্পন্ন করে পুলিশ। যদিও সংশ্লিষ্ট জেলা এবং তার আশপাশের জেলার সমস্ত থানাতেই ছড়িয়ে দেওয়া হয় মহিলার ছবি।
তবে মৃতার পরিবারের তরফে মিসিং ডায়েরি আসার পরেই অভিযুক্ত অরুণ রাজপুতের কথা জানা যায়। তদন্তকারীরা মহিলার নম্বর নিয়ে সিডিআর রিপোর্টের মাধ্যমে অরুণকে ট্র্যাক করেন। এরপরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে খুনের কথা কবুলও করে নিয়েছে অভিযুক্ত।