মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার ডিনডোরি তালুকার দুই গ্রামের প্রধান হিসেবে এখনও কর্তব্যরতা কবিতা। বর্তমানে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। শুধু উন্নয়ন নয়, গ্রাম দু'টির একাধিক বেআইনি কার্যকলাপও কড়া হাতে দমন করেছেন। তবে এই লড়াইটা সহজ ছিল না। কবিতার কথায়, বিশেষ ভাবে সক্ষম হওয়ায় একটা সময়ে তাঁকে নিয়ে অনেকেই মজা করতেন। অনেকে বলেছেন, যে ঠিক করে নিজের যত্ন নিতে পারে না, সে পুরো গ্রামের যত্ন নেবে কী ভাবে? কিন্তু তাঁদের কথায় মাথা ঘামাননি তিনি। পরিবারকে পাশে নিয়ে সমানে লড়াই করে গিয়েছেন। কবিতার বাবা ও ভাই তাঁকে অফিসে দিয়ে আসা ও নিয়ে যাওয়ার কাজ করতেন। কবিতা জানিয়েছেন, মাত্র ২৫ বছর বয়সে এ ভাবে গ্রামের পঞ্চায়েত হওয়ার বিষয়টিকে অনেকেই ভালো ভাবে নিতে পারেননি। কিন্তু নিজের কর্তব্যে অবিচল কবিতা।
advertisement
কবিতা ভোন্ডের বাবা পুণ্ডলিক ভোন্ডে প্রায় ১৫ বছর ধরে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। কিন্ত উচ্চ শিক্ষার অভাবে পরের দিকে সমস্যা হয় তাঁর। তাই ২০১১ সাল নির্বাচনে লড়ার জন্য নিজের মেয়ের নাম প্রস্তাব করেন তিনি। এ দিকে আগে কোনও দিন গ্রাম পঞ্চায়েতে বা পঞ্চায়েত রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না মেয়ে কবিতা। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অর্থাৎ সরপঞ্চ হিসেবে নির্বাচিত হন। এবং ধীরে ধীরে নিজেকে অভিজ্ঞ করে তোলেন। দাহেগাঁও ও ওয়াগলুড় দু'টি গ্রামেই মেয়েদের সেল্ফহেল্প গ্রুপও তৈরি করেছেন তিনি। নিজের বিচক্ষণতার জেরেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
গ্রামবাসীদের কথায়, গত ৯ বছরে গ্রাম দু'টিতে একাধিক পরিবর্তন এনেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে গ্রামের বাড়িঘর তৈরি করে দিয়েছেন। রাস্তা তৈরি করেছেন। গ্রামে মেয়েদের পড়াশোনার জন্যও নানা পদক্ষেপ করেছেন। গরিবদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ও পানীয় জল সরবরাহ করার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছেন।
এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, কবিতা সরপঞ্চ হওয়ার পর গ্রামের রাস্তাঘাট ভাল হয়েছে। শৌচালয় নির্মিত হয়েছে। গ্রামের নানা উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা তাঁর হাত ধরেই বাস্তবায়িত হয়েছে। গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রাকে এক নতুন দিশা দিয়েছেন তিনি।