স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, ছত্তিসগড়ের নবম শ্রেণীর ওই তরুণ বরাবর গেম খেলতে ভালোবাসত। তার কাছে মোবাইল গেম একটা নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গত বছর গেমের অ্যাডিশনাল ফিচার (বন্দুক ও বুলেট) কেনার জন্য বন্ধু চবন কুন্তের (Chavan Kunte) কাছ থেকে ৭৫,০০০ টাকা ধার নেয় সে। বন্ধুকে বলেছিল, সময় মতো ফেরত দিয়ে দেবে টাকা। কিন্তু সময় পেরিয়ে যায়। আর টাকা শোধ দিতে পারেনি তরুণ। এর মাঝে ৫ মার্চ আচমকা নিখোঁজ হয়ে যায় সে। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে স্থানীয় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় তরুণের পরিবার। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। দিন পাঁচেক পর অর্থাৎ ১০ মার্চ রায়পুরের সারানগড় থেকে তরুণের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু কী করে হল এসব?
advertisement
অভিযুক্ত কুন্তের বয়ান অনুযায়ী, এই বছর জানুয়ারি মাস থেকে বার বার টাকা চাইছিল সে। কিন্তু একের পর এক অজুহাত দিতে শুরু করে তার বন্ধু। পরে দেবে বলে, বার বার ফেরাতে থাকে তাকে। কুন্তে বুঝতে পারে টাকা দেওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই তার বন্ধুর। এবার একটি ছক কষে সে। বন্ধুকে মদ খাইয়ে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে বচসা বেধে যায় দু'জনের মধ্যে। শেষমেশ বন্ধুর গলা কেটে তাকে হত্যা করে কুন্তে।
পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের পর পুরো বিষয়টিকে কিডন্যাপিংয়ের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কুন্তে। কিন্তু CCTV ফুটেজের সূত্র ধরে পুরো রহস্যের সমাধান হয়ে যায়। পুলিশি জেরার মুখে পড়ে পরের দিকে সমস্ত কথা স্বীকার করে নেয় অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে যাবতীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে এটি প্রথম ঘটনা নয়। গেমের চক্করে পড়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে বহু তরুণ প্রাণ এভাবেই চলে গিয়েছে। ২০১৯ সালের মে মাস। মধ্যপ্রদেশের নিমাচের ১৬ বছরের তরুণ ফুরকান কুরেশির (Furqan Qureshi) কার্ডিয়ার অ্যারেস্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল। পরে জানা যায়, টানা ছয় ঘণ্টা ধরে PUBG খেলার জেরেই না কি এই ঘটনা ঘটেছে। আপাতত দেশে ব্যান করা হয়েছে গেমটি। বিশেষজ্ঞদের কথায়, একাধিক বিধি-নিষেধ থাকা সত্ত্বেও গেমের ফাঁদে পড়ে গোটা বিশ্বের যুবসমাজ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। বিষয়টি নিয়ে গভীরে চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে।