মাঝিপাড়া গ্রামের স্বরূপ পাতরের আট বছরের মেয়ে লক্ষ্মী নিজেদের নির্মীয়মাণ বাড়ির ছাদে খেলছিল। ছাদের পাশ দিয়ে যাওয়া ঝুলন্ত ১১ হাজার ভোল্টের তারে কোনওক্রমে সে হাত দিয়ে ফেলে। ডান হাত, বুক সমেত ঝলসে যায় লক্ষীর প্রায় পুরো শরীর। এরপর, তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে অবস্থার কোনও উন্নতি না হওয়ায়, স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার পিজি হাসপাতালে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সেখানে শেষ পর্যন্ত তার ডান হাতটি কেটে বাদ দিতে হয়েছে শরীর থেকে। তবে, এখনও বিপদ কাটেনি। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ শালবনীর বাসিন্দারা। শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিনু কোয়াড়ি জানিয়েছেন, "খুবই মর্মান্তিক ঘটনা, আমরা লক্ষ্মীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। পরিবারের সঙ্গে আমরা নিরন্তর যোগাযোগ রেখেছি।"
advertisement
এ দিকে, এই ঘটনায় বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানী WBSEDCL এর বর্তমান পরিষেবার বিষয়টি নিয়ে আবারও একবার তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জঙ্গলমহলবাসী। স্থানীয়রা জানালেন, দীর্ঘদিন ধরেই সঠিক মেনটেনেন্স বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিদ্যুৎ লাইনের তারগুলি ঝুলে রয়েছে। গত ২৬ তারিখে ইয়াস (Yash) সুপার সাইক্লোনের ফলে, বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের খুঁটিগুলি আরও হেলে যাওয়ার কারণে, লাইনের তারগুলি আরও ঝুলে যায়। শালবনীর এক বাসিন্দা জানালেন, "দফতরের বার বার জানানোর পরেও কোনও সুরাহা হয়নি।" এই ধরনের ঘটনারই 'চরম ফল' ভুগতে হল শালবনীর দিন আনা দিন খাওয়া ওই পরিবারকে। স্বরূপে'র বাড়ির উপর দিয়ে চলে যাওয়া ১১ হাজার ভোল্টের তারটিও অতিরিক্ত ঝুলে যাওয়ার কারণেই এই বিপদ ঘটেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানীর আধিকারিক থেকে বিডিও'কে ঘটনার কথা জানিয়েছেন শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহ। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের চরম গাফিলতির কারণে যেভাবে আজ লক্ষী ও তার পরিবারকে ভুগতে হচ্ছে তার ফের ঘটতে পারে যদি না অবিলম্বে প্রশাসন এই বিষয়টিতে নজর দেয় এবং সমস্যার সমাধান করতে এগিয়ে আসে।