রইল তিনটি প্রায় অজানা জায়গার হদিশ-
বাগুড়ান-জলপাই
নিরালা, শান্ত সমুদ্রের ধার। এখনও সেরকমভাবে টুরিস্টদের হামলা শুরু হয়নি! কাজেই, ছিমছাম, পরিষ্কার। ইতিউতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে জেলেদের গ্রাম। সন্ধেবেলা ওঁরা যখন জাল গুটিয়ে বাড়ি ফেরে, সে এক অপূর্ব দৃশ্য। ওদের কাছেই শুনতে পাবেন সমুদ্রে মাছ ধরার রোমাঞ্চকর সব গল্প।
advertisement
কীভাবে যাবেন- হাওড়া থেকে ট্রেনে কাঁথি স্টেশন। বাসে করে গেলে নামতে হবে কাঁথির সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে। হোটেলে বলে রাখলে ওরাই গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবে। বাসস্ট্যান্ড থেকে ভাড়া ২৫০ টাকা। স্টেশন থেকে ৩০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন- বাগুরান রিসর্ট। যোগাযোগ- সুভাষচন্দ্র ভুঁইয়া, ফোন- ৯৪৩৪০ ১২২০০। প্যাকেজে থাকা-খাওয়া সমেত মাথাপিছু এবং দিন প্রতি খরচ ৯৯০ টাকা।
পারডি
স্টেশনের নাম বরাভূম, কিন্তু শহরের নাম বলরামপুর। এখান থেকেই পারডির পথে যাত্রা শুরু। এই রাস্তাটাই গিয়েছে মাঠা হয়ে অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে। ডাইনে সবুজ উপত্যকা, মাঝেমাঝে গ্রামের ঘর-বাড়ি! বায়ে যতদূর চোখ যায় শাল, পিয়াল, পলাশ, মহুয়ার জঙ্গল। পিছনে মাথা উঁচিয়ে একা একটা পাহাড়। নীচের দিকটা সবুজ হলেও ওপরে ন্যাড়া পাথর বেরিয়ে রয়েছে। ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখবেন, পাথরে সাদা রঙ দিয়ে অনেক উড়ন্ত পাখির ছবি আঁকা। এটাই পাখি পাহাড়। এরপর একটা আদিবাসী গ্রাম পরে।
পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার দুটি যমজ গ্রাম-- পারডি ও চিরুগোড়া। পারডি ড্যামের বাঁ দিক থেকে একটা পাহাড় জলে নেমে গিয়েছে। উলটো দিক সবুজ জঙ্গলে মোড়া। এখান থেকে রাস্তা উঠে গিয়েছে অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায়। পারডি থেকে অনায়াসেই বেরিয়ে আসা যায় মাঠা বা মুখোশের গ্রাম চড়িদা।
কীভাবে যাবেন- হাওড়া থেকে রাতের চক্রধরপুর ফাস্ট প্যাসেঞ্জার বা সকালের রাঁচি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে বরাভূম। স্টেশন বা বলরামপুর শহর থেকে গাড়ি ভারা করে পারডি যেতে লাগে এক ঘন্টার মতো।
কোথায় থাকবেন- একটাই মাত্র থাকার জায়গা--গোর্গাবুরু রিসর্ট। যোগাযোগ- শুভ গুহ রায়। ফোন: ৯৪৩৩২ ৪৫০৭৩/ ৮৪২০১ ৬০৫৩৩। কিছুটা দূরে মাঠা রেঞ্জ অফিসের চত্বরে বনবিভাগের গাছবাড়ি বা মাঠা গ্রামবাসীদের হোমস্টে-তেও থাকা যায়।
আদুরিয়া
বর্ধমানের কাছেই, তিন দিকে জঙ্গল, একদিকে সবুজ শস্যভূমি ঘেরা ছিমছাম গ্রাম আদুরিয়া। বনবিভাগের বাংলোটি বেশ সুন্দর। বাংলোর আশেপাশে পায়ে হেঁটে ঘুরেই একটা দিন কেটে যাবে। পরের দিন স্থানীয় গাড়ি নিয়ে যান আমজারুলিয়া সাঁওতালপাড়া। তার কাছেই কালিকাপুরে, বর্ধমানের দেওয়ানজির প্রাসাদ। এখন অবশ্য খন্ডহর। শোনা যায়, ভাঙা এই প্রাসাদে এখনও নাকি অমাবস্যার রাতে দেওয়ানজির পায়ের মচমচ শ্বদ শোনা যায়! জঙ্গলের ভিতর ভগ্ন নীলকুঠি, পিছনে জলভরা সায়রটি এখনও আছে।
কীভাবে যাবেন- এসপ্লানেড থেকে সিউড়ি অথবা বোলপুরের বাসে ১১ মাইল স্টপে নেমে রিকশা বা মোটর ভ্যানে ৩ কিলোমিটার দূরে আদুরিয়া বনবাংলো। কিংবা, এসপ্লানেড থেকে দুর্গাপুরের বাসে পানাগড় নেমে ভাড়া গাড়িতেও যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন- বনবাংলোর বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসারের সঙ্গে। ফোন: ০৩৪২ ২৬৫৭১৭২
*পয়লা বৈশাখের সময় হোটেল ও গাড়ি ভাড়া একটু আধটু বাড়তে পারে।