জুভেনাইল ডায়াবেটিসের চিকিৎসা:
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ-ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বিধি মেনে ইনসুলিন থেরাপি দেওয়া হয়। আর এটা নির্ভর করে কত দিন ধরে রোগী এই রোগে আক্রান্ত এবং কতটা ডোজ দরকার, তার উপর। এর তালিকায় থাকতে পারে ৩-৪ ডোজ র্যাপিড-অ্যাক্টিং ইনসুলিনের সঙ্গে লং অ্যাক্টিং ইনসুলিনও। এমনকী শরীরে ইনসুলিন সরবরাহ করার জন্য ইনসুলিন পাম্প ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা ছোট্ট একটা ডিভাইস, যার মাধ্যমে সারা দিন ধরে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনসুলিন শরীরে সরবরাহ করা হয়। সর্বোত্তম ভাবে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিদিন ৩-৪ বার করে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। আর গ্লুকোমিটারের সাহায্যে এটা করা সম্ভব। ইদানীং কালে কন্টিনিউয়াস গ্লুকোজ মনিটরস বা সিজিএমএস তৈরি হয়েছে। যেখানে একটি সূক্ষ্ম ছুঁচকে ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে শরীরের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় এবং কয়েক মিনিট অন্তর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা হয়।
advertisement
শিশুদের দেহে টাইপ-১ ডায়াবেটিস রয়েছে কি না, কী ভাবে বোঝা সম্ভব?
জন্মের পরে যে কোনও সময় থেকেই শিশুদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ডায়াবেটিস। আর সে-ক্ষেত্রে কিছু কিছু উপসর্গ প্রকাশ পায়। যার মধ্যে অন্যতম হল অতিরিক্ত প্রস্রাব, রাতে মূত্রের বেগ চাপতে সমস্যা, জল তেষ্টা, খিদে, ওজন কমে যাওয়া, মানসিক অবসাদ, ক্লান্তি, বমি এবং পেট ব্যথা প্রভৃতি। শুধু টাইপ ১ ডায়াবেটিসই নয়, অনেক শিশুর মধ্যে টাইপ ২ ডিএম অথবা বিরলতম নিওনেটাল ডায়াবেটিস দেখা যায়। এই ধরনের ডায়াবেটিস জন্মের পরেই কিংবা ১ বছর বয়সেই দেখা যায়। এমনটাই জানিয়েছেন আর এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের আদর্শ ডায়েট এবং লাইফস্টাইল সংক্রান্ত পরামর্শ:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ব্যালেন্সড এবং পুষ্টিকর ডায়েট খুবই জরুরি। তাতে অত্যন্ত বেশি পরিমাণে যোগ করা উচিত শাক-সবজি, ফলমূল, হোল গ্রেন এবং প্রোটিন। চিনি কিংবা মিষ্টি এবং রিফাইন করা কার্বোহাইড্রেট তালিকা থেকে বাদ দেওয়া জরুরি। খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এরোবিক এক্সারসাইজ করতে হবে। সেই সঙ্গে এন্ডোক্রিনোলজিস্ট অথবা ডায়াবেটোলজিস্টের কাছে গিয়ে নিয়মিত চেক-আপ করানো উচিত। এই ছোট ছোট বিষয়গুলি মেনে চললেই সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতাও এড়ানো যাবে।
আরও পড়ুন: কে গুরুপদ মাঝি? শুক্রবার 'বোমা' ফাটানোর প্রতিশ্রুতি শুভেন্দুর! তোলপাড় বাংলা
বাচ্চাদেরও কি ইনসুলিন দেওয়া যায়?
এটা অটোইমিউন রোগ, টাইপ ১ কিন্তু জেনেটিক বা জিনগত নয়। তবে এই ধরনের ডায়াবেটিস রোগ ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইনসুলিনের প্রয়োজন হয়। যেখানে সাধারণ কোষের কার্যকারিতার জন্য গ্লুকোজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে অতিরিক্ত গ্লুকোজের মাত্রা কিন্তু জটিলতা তৈরি করতে পারে। রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতে সাহায্য করে ইনসুলিন। আর এই কারণেই টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের সারা জীবন ইনসুলিন থেরাপির প্রয়োজন হয়। সুগারের মাত্র ঠিকঠাক রাখার প্রথম পদক্ষেপই হল প্র্যান্ডিয়াল ইনসুলিন।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য কী কী করণীয়?
কম বয়সে এই ধরনের ক্রনিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হলে তা অভিভাবক এবং শিশু উভয়ের জন্যই কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এই পরিস্থিতিতে সন্তানের এমন ক্রনিক রোগের কারণে মা-বাবারা মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। আর শিশুরাও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। তাই স্কুলে ভর্তি করার সময় সেখানেও জানাতে হবে সন্তানের রোগের বিষয়ে। দুপুরের দিকে ইনসুলিন ডোজের গুরুত্বটা স্কুলকে বুঝিয়ে সহানুভূতিশীল হওয়ার জন্যও অনুরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্যজনিত জটিলতা সত্ত্বেও এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা যখন ঠিক ভাবে শিক্ষা এবং সঠিক যত্ন ও স্কুলের থেকে সহানুভূতি পাবে, তখন তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সক্ষম হবে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)