আর অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দরজা-জানলার পর্দা (Curtains)। কারণ ঘর একঘেয়ে হলেও জানলা-দরজায় যদি রঙবেরঙের পর্দা ঝোলে, তা-হলে কিন্তু ঘরের সাজটাই পাল্টে যেতে পারে। আবার ঘর কিংবা দরজা-জানলার মাপ এবং ঘরের আসবাবপত্রের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই ব্যবহার করতে হবে পর্দা। না-হলেই সবটা ঘেঁটে যেতে পারে। তাই পর্দা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজ সেই নিয়েই কথা বলব আমরা।
advertisement
রঙ এবং কাপড়:
পর্দা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এর উপাদান। আসলে এটা কোন উপাদান অথবা কাপড় দিয়ে তৈরি, সেটাই ঘরের সাজের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে। অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব ভারী কাপড়ের পর্দা হলে তা টানার সময় ঠিক ভাবে ভাঁজ হবে না। আবার খুব হালকা হলেও সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যাগুলি এড়াতে বুঝেশুনে দেখে নিতে হবে কোন উপাদান পর্দার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার পর্দার রঙটাও ভীষণই জরুরি। আসলে এর থেকেই অন্দরমহল এবং সেখানে বসবাসকারীর রুচির একটা ধারণা পাওয়া যায়। গৃহসজ্জা বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, যে-ঘরে খুবই আলো খেলে, সেই ঘরে উজ্জ্বল রঙের পর্দা না-ব্যবহার করাই ভাল। কারণ সূর্যের আলোর কারণে পর্দার রঙ খুব তাড়াতাড়িই ফিকে হয়ে যেতে পারে। তাই এই সব ক্ষেত্রে নিউট্রাল রঙই বাছার পরামর্শ দেন তাঁরা। ভারতীয় বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের তৈরি পর্দা ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল - কটন, হ্যান্ডলুম, লিনেন, সিল্ক, ভেলভেট প্রভৃতি। আবার যাঁরা ঘর ঠান্ডা রাখতে চান কিংবা ঘরে আলোর প্রবেশ পছন্দ করেন না, তাঁরা জানলায় স্যোয়েড, ভেলভেট, ট্যুইডের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। ঠিক যেমনটা করা হয় বেশির ভাগ হোটেলে। আর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, সিল্কের পর্দা লাগাতে চাইলে ভিতরে লাইনিং দিতে হবে। না-হলে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
পর্দার ঝুল:
দরজা-জানলার পর্দা কতটা লম্বা হবে বা ঝুল কত হবে, সেটাও কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ। জানলার ফ্রেমের থেকে একটু উঁচু থেকে পর্দা ঝোলালে ঘরটাও বেশ বড়সড়় লাগে। এমনটাই দাবি অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞদের। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা জানলার ফ্রেমের প্রায় ৬ ইঞ্চি উঁচু থেকে পর্দা ঝোলান। এতে ঘরের সজ্জায় একটা আলাদা মাত্রা যোগ হয়। এর সঙ্গে যদি জানলার পর্দা মেঝে ছুঁয়ে যায়, তা-হলে ঘরের সৌন্দর্য আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
পর্দা ধোওয়ার বিষয়:
পর্দা এমন একটা সামগ্রী, যার উপর হামেশাই ধুলো-ময়লা জমবে। ফলে সময়ে-সময়ে তা পরিষ্কার করে কেচে-ধুয়ে নিতে হবে। আসলে অনেকেই ওয়াশিং মেশিনে পর্দা ধুয়ে নেন। আবার এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা ড্রাই ক্লিনিংয়ে দেন। তাই পর্দা কেনার আগে ভেবে রাখতে হবে, তা পরিষ্কার করার উপায়। আসলে ভালো মানের পর্দা আমরা বাড়িতে ধুয়ে নিতে পারব না। তাতে সেই পর্দার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ফলে আগে থেকে ভেবে নিয়ে পর্দা বাছলে ভবিষ্যতে সময় এবং টাকা- দুইই বেঁচে যাবে।