তবে করোনারি ক্যালসিয়ামজাতীয় পদার্থ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্টিংয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। স্টেন্টের উপর ওষুধের কোটিংও এর জেরে আলাদা হয়ে যায়। এই ধরনের ব্লকেজ দূর করতে শক ওয়েভ থেরাপি কতটা কার্যকর, সেই বিষয়ে আলোচনা করছেন সিকে বিড়লা হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের মেডিক্যাল ডিরেক্টর এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. অনিল মিশ্র।
advertisement
আগে এই ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ ভাঙার জন্য উচ্চচাপযুক্ত বেলুন ব্যবহার করা হত। কিন্তু এই বেলুনের ব্যবহার বেশির ভাগ সময়ই সফল হয় না। কারণ অতিরিক্ত ঘন এই ক্যালসিয়াম জাতীয় উপাদানকে সহজে ভাঙা যায় না। এর পরিবর্তে উল্টো দিকের সুস্থ-স্বাভাবিক প্রাচীর প্রসারিত হয়ে ছিঁড়ে যেতে পারে। অনেক সময় রোটেশনাল অথবা অরবিটাল অ্যাথেরেক্টোমির সাহায্যে ক্যালসিফায়েড ধমনীর ভিতরে হাই-স্পিড ড্রিলিং করতে হয়। তবে এই প্রক্রিয়া তুলনামূলক ভাবে বেশ জটিল। বহু ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টের কাছে এর প্রশিক্ষণ থাকে না। সেই সঙ্গে এই জটিল প্রক্রিয়ার নিজস্ব কিছু সীমা-পরিসীমা থাকে। এমনকী, এর জটিলতার হারও বেশি। যার ফলে এটা খুব একটা ভাল বিকল্প নয়। এই ধরনের রোগীদের জন্য আগে একমাত্র বিকল্প ছিল বাইপাস সার্জারি। তবে আশির কাছাকাছি কিংবা তার বেশি বয়সী রোগীদের জন্য তো এটা একেবারেই ঠিক নয়।
আরও পড়ুন– ভাইজাগে হানিমুন-এ গেলেন শন এবং ঐশ্বর্য! তার পর…? আগামী ১৯ মে খুলতে চলেছে রহস্যের জট
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রযুক্ত ও কৌশল এসেছে। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই নিজস্ব কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আজকালকার দিনে ডাক্তাররা এক কৌশল ব্যবহার করছেন। যার নাম শক বুম থেরাপি অথবা শকওয়েভ থেরাপি অথবা ইনট্র্রা ভাস্কুলার লিথোট্রিপসি (আইভিএল)। এর মাধ্যমে উচ্চচাপযুক্ত অ্যাকাউস্টিক ওয়েভ উৎপন্ন হয়। যা বেলুন থেকে ধমনীর মধ্যে প্রবাহিত হয়। আর ধমনীর দেওয়ালে জমে থাকা ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ ভাঙা হয় এই শক ওয়েভের মাধ্যমে। এই পদ্ধতি সহজ-সরল, জটিলতা তেমন নেই বললেই চলে। তবে এক্ষেত্রে ভিতরে উচ্চ গতিসম্পন্ন ড্রিল ঘোরাতে তেমন প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা লাগে না।
এই শক ওয়েভ থেরাপি শুধুমাত্র উপরের দিকের স্তর ভাঙে না, তার পাশাপাশি গভীরে থাকা ক্যালসিয়ামের স্তরকেও ভাঙতে সক্ষম। যা অন্য কোনও কৌশলের ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। এই থেরাপির ক্ষেত্রে যে প্রসারিত বেলুন ব্যবহৃত হয়, তা অনন্য। সাধারণ বেলুন কিন্তু প্রয়োজনীয় সনিক প্রেশার ওয়েভ ইমপাল্স তৈরি করতে পারে না। তবে শক ওয়েভের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বেলুন এটা তৈরি করতে সক্ষম। এই প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ কিংবা উদ্যমের প্রয়োজন হয় না। এই কৌশলে ক্যালসিয়াম ভাঙার পরে স্টেন্ট প্রতিস্থাপন করা হয়। ফলে ধমনীও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। আর এর সাফল্যের হারও অনেকটাই বেশি। ফলে বিশেষজ্ঞরা এটা করারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।