ঘুরতে যাওয়া আপনাদের সকলের কাছে একটি শখ। গরমের ছুটিতে ঘুরে আসা যেতেই পারে বাংলা ওড়িশা সীমানায় থাকা এই সুন্দর মনোরম জায়গা থেকে। নেই কোন যানবাহনের শব্দ, নেই কোনও কোলাহল, যতদূর দুচোখ যায় তত দূরে শুধু সবুজ আর সবুজ। তাই মন ভাল করার শ্রেষ্ঠ ঠিকানা বাংলা ওড়িশা সীমানায় থাকা এই জলা বাঁধ। এখানে এলে দুই রাজ্যের ভাষা এবং দু’ রাজ্যের সংস্কৃতি উপভোগ করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এখানকার ইতিহাস আপনাকে নিয়ে যাবে সুদূর অতীতে। তাই অন্তত একদিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন এই জায়গা থেকে।
advertisement
পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা সীমানা এলাকায় রয়েছে প্রায় ৪ কিলোমিটারে বেশি দীর্ঘ এটি বাঁধ। যেখানে সংরক্ষিত রয়েছে জল। মূলত পানীয় জল এবং চাষের জলের সরবরাহের জন্য উনবিংশ শতকে নির্মিত হয়েছিল, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও সেই প্রাচীনত্বের ধারাকে বজায় রেখেছে বাঁধের পাশে থাকা পুরানো আম গাছগুলি। স্বাভাবিকভাবে তৎকালীন সময়ে রায়বনিয়া দুর্গের অনতি দূরে সেচের কাজ এবং পানীয় জলের জন্য নির্মিত হয়েছিল এই জলা বাঁধটি। এই বাঁধের নাম রাজবাঁধ বা রাজাবাঁধ। বাঁধের পাশে প্রাচীন আম গাছগুলি প্রাচীন রাজকীয়তা বজায় রেখেছে।
লাল মোরাম দিয়ে তৈরি উঁচু একটি বাঁধ। যার এক পাশে পশ্চিমবঙ্গের নয়াগ্রাম ব্লক, অন্যপাশে ওড়িশার জলেশ্বর ব্লক। বাংলা এবং ওড়িশা রাজ্যের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই বাঁধটি বর্তমানে ওড়িশা সরকারের অধীন। বাঁধের একপাশে রয়েছে মোটা মোটা প্রাচীন আম গাছ। যা এই এলাকায় প্রাচীনত্বের ধারাকে অব্যাহত রেখেছে। অপর পাশে নীল জলরাশি। স্বাভাবিকভাবে পর্যটন মানচিত্রে আর অন্যতম দিশা এই জায়গা। গ্রামের মানুষ জলে জাল পেতে মাছ ধরছে। স্বাভাবিকভাবে শহরের কোলাহল, অফিসের কচকচানি থেকে নিজেকে একটু রেহাই দিতে এই জায়গায় এলে ফুরফুরে বাতাসের সঙ্গে এক আলাদা আমেজ মিলবে। ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম থেকে মাত্র সামান্য কিলোমিটার দূরে এই বাঁধ।
আরও পড়ুন : প্রাচীন রীতিতে সবুজের কোলে প্রকৃতির উপকরণে পূজিত গ্রামদেবতা
একদিকে যেমন গ্রামীণ পরিবেশ, অন্যদিকে দুই রাজ্যের সংস্কৃতি এবং ভাষার মেলবন্ধনের পাশাপাশি এমন সুন্দর একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনার মন ভাল করবে। শুধু তাই নয়, লাল মোরামের রাস্তার উপর দিয়ে আচ্ছাদিত হয়েছে আম গাছের শাখা প্রশাখা, একবার না দেখলে বিশ্বাস হবে না কতটা সুন্দর হতে পারে প্রকৃতি? তাই অন্তত একদিনের ছুটি নেই ঘুরে দেখুন এই জায়গা।