প্রচলিত কথাতে রয়েছে ‘গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না।’ এই প্রচলিত প্রবাদ বীরভূমের সদর শহর সিউড়ির মোরব্বার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ঐতিহ্যবাহী মোরব্বার কদর কমছে খোদ শহরেই। শুধুই কি সিউড়ি! এর পাশাপাশি রামপুরহাট এবং বোলপুর থেকে যারা প্রত্যেকদিন এ মোরব্বা কিনে নিয়ে যেতেন তাঁদের কেনার ক্ষেত্রেও কদর কমেছে। মিষ্টি ব্যবসায়ীদের একাংশের আশঙ্কা, ঘরে ঘরে ব্লাডসুগার রোগীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সে কারণেও মোরব্বা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন শহরের বাসিন্দারা।
advertisement
এই বিষয়ে বীরভূমের এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ মণি জানাচ্ছেন মূলত নিত্যনতুন বাজারে অত্যাধুনিক খাবার উঠে এসেছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে গেলেই বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি পাওয়া যাচ্ছে, আর সেই কারণেই যেমন একদিকে কদর হারাচ্ছে সিউড়ির বিখ্যাত মোরব্বা। অন্যদিকে বর্তমান জীবনে প্রায় প্রত্যেকেরই ব্লাডসুগার কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে। আর মোরব্বা বিভিন্ন ফল থেকে তৈরি হলেও এতে মিষ্টি পরিমাণ থাকে অনেকটাই বেশি। আর সেই কারণেই মোরব্বা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ মানুষজন।
বিভিন্ন নথি ও মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মোরব্বার সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজনগরের রাজাদের কথা। তাঁদের এক পূর্বপুরুষ আগ্রায় গিয়ে পেঁপের পিঠা বা মোরব্বার প্রেমে পড়েন। তার পর থেকে রাজনগরের ও তাঁতিপাড়া বিভিন্ন ময়রা রাজার অনুরোধে এই মিষ্টি তৈরি করতে শুরু করেন। রাজ্যের অন্যান্য জেলা যেমন শক্তিগড়ের ল্যাংচা, বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা, গুপ্তিপাড়ার কাঁচাগোল্লা, বাঁকুড়ার মেচা সন্দেশ বিখ্যাত। তেমনই জেলা সদর সিউড়ি বিখ্যাত হয়ে ওঠে মোরব্বার জন্য। তবে আজ হারিয়ে যাচ্ছে সিউড়ির এই মোরব্বা এর প্রাধান্য।