বাচ্চাদের ঘন ঘন অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। এই নিয়ে মা-বাবাও শিশু বিশেষজ্ঞদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এখন এই শরীর খারাপ সাধারণ ঘটনা না কি এই নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে, সে সম্পর্কে শিশু বিশেষজ্ঞরা যা বললেন তুলে দেওয়া হল এখানে।
আরও পড়ুন: ঘরে ঘরে বাচ্চা-বয়স্ক সবার জ্বর, উপসর্গ চিনে সাবধান থাকুন
advertisement
নারায়ণ হেলথ দ্বারা পরিচালিত এসআরসিসি চিলড্রেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (পেডিয়াট্রিক মেডিসিন) ডা. মহেশ বালসেকারের কথায়, ‘বর্ষাকালে সংক্রমণ এমনিই বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে। ফলে শিশুরা ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। কোভিডের কারণে প্রায় ঘরবন্দি জীবন কাটছে। এতে একদিক থেকে ভাইরাল সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচিয়েছে। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় উধাও হয়ে গেছে বললেই চলে। এটাই এ বছর সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে’।
আরও পড়ুন: গাছের প্রাণ বাঁচাতে ড্রয়িং রুমে আসছে 'মাধবীলতা', এক আদিবাসী কন্যার অদ্ভুত গল্প!
সাধারণত রিপোর্ট করা উপসর্গ এবং স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, মেদান্ত হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক্সের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বিনীত কোয়াত্রা বলেন, ‘ব্যাপক জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে শিশুরা আসছে। ৫০৭ দিনেরও বেশি সময় ধরে এই জ্বর থাকছে। যা নিঃসন্দেহে টাইফয়েড এবং কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু। এইবার আমরা স্ক্রাব টাইফাসের ক্ষেত্রেও দেখছি, বাচ্চাদের জ্বর ৫-৭ দিনের বেশি সময় ধরে থাকছে। নিয়মিত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও সারছে না। তবে শিশুরা সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হচ্ছে না, এটা ভাল লক্ষণ’।
জ্বর হলে কীভাবে চিকিৎসা করা উচিৎ: সন্তানের কিছু হলে বাবা-মা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, সেটাই স্বাভাবিক। বর্ষায় সাধারণত হালকা জ্বর, কাশি, সর্দি, বমি দিয়ে শুরু হয়ে সেটা জ্বরে পরিণত হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, ‘২ দিনের বেশি জ্বর থাকলে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে’। ঘরেই জ্বরের চিকিৎসা করা যায়। এজন্য প্যারাসিটামলের মতো জ্বরের সাধারণ ওষুধ বাড়িতে রাখা উচিত। প্রতি ৪ ঘণ্টা থেকে ৬ ঘণ্টা অন্তর এটা দেওয়া যেতে পারে। প্যারাসিটামলে জ্বর না কমলে কলের জল দিয়ে শিশুর শরীর স্পঞ্জ করে দিতে হবে। তবে বরফ বা ঠান্ডা জল ব্যবহার না করাই উচিত। এর পরেও জ্বর না নামলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা দেওয়ার গুরুত্ব: ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স ৬ মাস বয়সের পরে সমস্ত শিশুকে 'ফ্লু' বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দেয়। ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের যদি অনাক্রম্যতা বা দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তবেই ফ্লু ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। যদিও করোনা চলাকালীন সমস্ত শিশুকেই ফ্লু ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
