দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের প্রায় ১৭ থেকে ১৮ জন মানুষ নিজেদের হাতের নিপুণতা দিয়ে শোলা দিয়ে তৈরি করছে সূর্যমুখী, ডালিয়া থেকে শুরু করে ১০ থেকে ১২ প্রজাতির ফুল। এই ফুল পাড়ি দিচ্ছে আমেরিকা, লন্ডন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়াতে। এস্কাইনোমিনি অ্যাস্পেরা বা শোলা গাছ একটি জলজ সপুষ্পক উদ্ভিদ। উদ্ভিদটির কাণ্ডের সাদা নরম মজ্জা অংশটি ব্যবহৃত হয় শোলার কাজে। বর্তমানে এই অঞ্চলের বহু গ্রামের মানুষজন শোলার ওপর ভর দিয়ে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন। ওঁদের তৈরি এই ফুল রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে দেশের অন্যান্য রাজ্যে তো যায়ই পাড়ি দেয় ইতালি আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। উড়ে যায় মার্কিন মুলুকেও।
advertisement
এখানে ঘরে ঘরে শোলার কাজ। শোলাই প্রাণের স্পন্দন। শোভন রায় মন্ডল জয়নগর ডট কম সংস্থার কর্ণধার তিনি বলেন, “এলাকার মহিলাদের এই যে কুটির শিল্প এই শিল্পকে বিদেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। গ্রামের মহিলাদের এই হাতের কাজ এখন বিদেশে প্রশংসিত। গ্রামের মহিলারা এই শোলার ফুলের কাজ করে স্বনির্ভর হচ্ছে, শুধু মহিলারা নয়, এই শোলার ফুলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে গ্রামের পুরুষেরাও। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের মহিলাদের কীভাবে স্বনির্ভর গড়ে তোলা সেই উদ্দেশ্য আমরা পূরণ করার চেষ্টা করছি। গ্রামের এই মহিলাদের এই হাতের কাজ জয়নগর ডট কম এর মাধ্যমে খুব সহজে বিদেশের মানুষ এগুলিকে অর্ডার দিচ্ছে এবং আমাদের অর্ডার পৌঁছে যাচ্ছে বিদেশে। আমাদের সব থেকে বেশি অর্ডার আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এর পাশাপাশি বিদেশে কম বেশি এই কাজের চাহিদা রয়েছে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মিতা হালদার বলেন, “জন্ম থেকেই এই কাজের সঙ্গে আমরা যুক্ত আমাদের এখানে শোলার চাষ থেকে শুরু করে শোলার পাতা কাটা এবং শোলার ফুল তৈরি করা সমস্তটাই নিপুরতার সঙ্গে করা হয়। শুধু আমরা নয় এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই এই পেশার ওপর জীবিকা নির্ভর করে। আমাদের তৈরি এই শোলার ফুল বিদেশে যাচ্ছে আমরা খুব খুশি। এই ফুলের মাধ্যমে আমাদের সংসার নির্বাহ হচ্ছে।”
টুম্পা মিস্ত্রি তিনি বলেন, “এখানে সূর্যমুখী থেকে শুরু করে নানা ফুল তৈরি হয় ছোটবেলা থেকেই আমরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। সংসারের সমস্ত কাজ সেরে এই কাজে আমরা সময় দিই। এই কাজ থেকে যে টাকা ইনকাম হয় সেই টাকায় চলে সংসার। জয়নগরের সুবিখ্যাত মোয়ার পাশাপাশি জয়নগরের দক্ষিণ বারাসাতের শোলার ফুলও এখন জগৎজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছে।”
সুমন সাহা