রামপুরে বরাবরই গ্রীষ্মের সূর্যতাপ প্রখর, তাপপ্রবাহ জীবন দুর্বিষহ করত। এমন আবহাওয়ায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজা ও প্রজা সবাই সমস্যায় পড়তেন। কিন্তু, রামপুরের নবাব গরম থেকে বাঁচার একটা বিশেষ সমাধান বের করেছিলেন। তিনি শহরের মধ্যে একটি শীতল এবং আরামদায়ক জায়গা তৈরি করেছিলেন, যাকে আমরা এখন কোঠি বেনজির নামে চিনি।
advertisement
কোঠি বেনজির নবাব হামিদ আলি খানের আমলে নির্মিত একটি গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ। INTACH (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ) রোহিলখণ্ড অধ্যায়ের সহ-আহ্বায়ক কাশিফ খান বলেছেন যে, এই প্রাসাদটি একটি বিশেষ উপায়ে ডিজাইন করা হয়েছিল যাতে এটি গ্রীষ্মেও শীতল থাকে।
দেওয়াল খুব বিশেষ ভাবে তৈরি
এই বাড়ির দেওয়ালগুলো অনেক মোটা ও চওড়া ছিল, যার কারণে বাইরে থেকে তাপ ভিতরে প্রবেশ করত না। এটিতে উচ্চ এবং শক্তিশালী লিন্টেল ছিল, মিনারগুলি লাল সীসা এবং চুনের মতো উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল, যা তাদের প্রাকৃতিকভাবে শীতল রাখত। যখনই কেউ এই প্রাসাদে প্রবেশ করত, তখনই সে এক শীতলতা অনুভব করত।
নবাব বেগমের গ্রীষ্মকালীন আবাস
এই প্রাসাদটি ইন্দো-ইউরোপীয় শৈলীতে ডিজাইন করা হয়েছিল, যাতে ভারতীয় এবং ইউরোপীয় স্থাপত্যের একটি সুন্দর মিশ্রণ দেখা যায়। এটি কেবল একটি বাসস্থানই নয়, নবাব ও তাদের বেগমদের জন্য একটি গ্রীষ্মকালীন আবাস ছিল। গ্রীষ্মকালে বেগমরা এখানে আসতেন এবং নবাবও কয়েকদিন তাঁদের কাছে থাকতেন।
ঐতিহাসিক স্থাপনা
কোঠি বেনজির শুধু একটি ঐতিহাসিক ভবন নয়, এটি নবাবি জীবনধারা এবং তার প্রজ্ঞার প্রতীক, যা আবহাওয়া অনুযায়ী নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখেছে। আজও এই প্রাসাদটি তার শীতল দেওয়াল, সুন্দর কাঠামো এবং রাজকীয় শৈলী সহ সেই যুগের অনেক গল্প বলে। রামপুরের এই প্রাসাদটি এখনও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রূপে শহরের গর্ব হিসেবে বিবেচিত। এর থেকে বোঝা যায়, প্রাচীনকালে মানুষ কীভাবে কোনও মেশিন বা এসি ছাড়াই তাপ থেকে বাঁচতে চমৎকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন!