শালিনী ছেলেটির প্রেমে সাড়া দেওয়ার পর আস্তে আস্তে শুরু হয় আসল গণ্ডগোল। ছেলেটি শালিনীকে সব জায়গায় ফলো করতে শুরু করে। শালিনী যদি তার স্কুলের ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে তাহলেও সে ঝামেলা শুরু করে। শালিনীর ফোন ঘেটে দেখে অন্য কোনও ছেলে তাকে ফোন বা এসএমএস করেছে কিনা ! সব সময় শালিনীকে আতঙ্কে রাখতে শুরু করে ছেলেটি। শালিনীর বন্ধুরা বলতে থাকে, তুই কত লাকি। তোকে ও এত ভালবাসে। কিন্তু শালিনীই জানে সে কিসে আটকে পড়ছে। রাতে ঘুমের মধ্যে ভয় পেয়ে জেগে যাচ্ছে সে। ঘুম আসতে চাইছে না। সারাক্ষণ একটা আতঙ্ক তাকে ঘিরে থাকছে। এটা ভালবাসা নয়। এই রকম অবস্থা হলে তা কখনই ভালবাসা হতে পারে না। এরকম যদি কারও সঙ্গে হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু সতর্ক হওয়া দরকার।
advertisement
এই সময় হরমনের পরিবর্তনের জন্য টিনেজারদের শরীর ও মনের নানা রকম পরিবর্তন হয়। এই সময় টিনেজাররা সব সময় সঠিক যৌনতা ও রিলেশনশিপের ধাঁধায় জর্জরিত হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা কিছু বুঝে উঠতে পারে না। ভালাবাসায় অধিকার বোধ বেড়ে গেলে মানুষকে পণ্য মনে হয়। টিনেজাররা না বুঝেই শিকার হয় এই মানসিক নিগ্রহের বা যৌন নিগ্রহের। কারণ তারা নিজেদের সমস্যা নিয়ে বাবা মায়ের সঙ্গে খোলাখোলি কথা বলতে পারে না।
কি করে বুঝবে টিনেজাররা যে তারা নিগ্রহের শিকার হচ্ছে ? মানসিক বা শারীরিক নিগ্রহ বোঝার জন্য কতগুলো ব্যবহারকে চিনতে হয়। কোনও সম্পর্কেই কারও যেন মনে না হয় তার মতের কোনও দাম নেই। তাকে পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না, বা জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন হলে আগেই সতর্ক হন। কারণ যারা নিগ্রহ করতে চায় তারা সম্পর্কের ওপর জোর দেখাতে চায়। আর শারীরিক নিগ্রহ মানেই চড়, থাপ্পড়, শরীরে নিগ্রহের দাগ।
হুমকি : অনেক রকম ভাবে হুমকি আসতে পারে সম্পর্কে। পার্টনার আপনাকে নানা রকমভাবে ফলো করে, গতিবিধির ওপর নজর রেখে আপানর ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে? এবং আপনাকে কোনও কিছু করা নিয়ে হুমকি দেন , তাহলে এখনি সতর্ক হন।
সুস্পষ্ট হুমকি: এই বিষয়ের মধ্যে আসতে পারে অ্যাসিড অ্যাটাক বা কেউ কাউকে ছেড়ে গেলে সুইসাইড করার মতো ঘটনা।
ভয় দেখানো: একবার শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার পরে কেউ কাউকে ছেড়ে চলে যেতে চাইলে ভয় দেখানো, যে সবাইকে বলে দেব আমরা যৌন সঙ্গ করেছি। অনেকে বন্ধুদের মধ্যে ছবি ছড়িয়ে দেয়।
খারাপ কথা বলা: অনেক সময় মেয়েদেরকে বলা হয় মোটা, কালো, বাজে দেখতে এগুলোও কিন্তু এক ধরণের নিগ্রহ।
নিস্তব্ধে কাজ সারা: অনেক সময় যে নিগ্রহ করে সে তার লক্ষ ব্যক্তিকে পাত্তা না দিয়ে। অবহেলা করেও আদায় করতে চায় নিজের অধিকার। কেউ যদি কারও প্রপোসাল মেনে না নেয় তখন এই ধরনের নিগ্রহ হয়।
সবসময় সমালোচনা করা: এমন কিছু বন্ধু বা কাছের মানুষ থাকে যারা সব সময় আপনার কাজের সমালোচনা করে। আপনার সমালোচনা করে। সেখানে যেতে আপনি চান না। কিন্তু কারণ খুঁজে জানেন না। এটাও কিন্তু একধরণের মানসিক নিগ্রহ।
যৌন নিগ্রহ: অনেক সময় পরিবারের মধ্যেও যৌন নিগ্রহের শিকার হয় মেয়েরা বা ছেলেরা। তবে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জোর দেখিয়ে যৌনতা করা হয়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌনতায় লিপ্ত হতে হয়। পরে সেই যৌনতার ভয় দেখিয়ে বার বার যৌন সম্পর্ক করা হয়।
এই জিনিসগুলোর মধ্যে যদি কোনও একটিও হয় তোমার সঙ্গে বা আপনার সঙ্গে তাহলে এখুনি এই সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। কেউ ভয় দেখালে বাড়ির লোককে সব খুলে বলতে হবে। তাই ভয় না পেয়ে কথা বল।