বেশিরভাগ বাচ্চারা টেক-স্যাভি৷ অযথা ঝামেলা এড়াতে বাবা-মায়েরও প্রবণতা থাকে তাদের হাতে মোবাইল বা নোটপ্যাড তুলে দেওয়া৷ তবে যে সময় বাড়ির সকলে উপস্থিত থাকছেন তখন নিয়মিত অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটতেই পারে৷ বাবা-মা হিসেবে আপনার প্রথম কাজ হল সেটার সময় অত্যন্ত কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা৷
১) বাচ্চার বয়স যদি ৪ বছরের ওপর হয় তাহলে তাকে আপনার সকল কাজের সহকারী বানিয়ে নিন৷ ঘর পরিষ্কার থেকে আরম্ভ করে গাছের যত্ন করা, রান্নার সামগ্রী এগিয়ে দেওয়া সবেতেই৷ খেয়াল রাখুন যে ছোট বলে যেন তাকে এই সব কাজে অমর্যাদ না করা হয়৷ বুঝতে দিন যে সেও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছ৷ এর থেকে তার দায়িত্ববান হওয়ার প্রথম শিক্ষাটি সে পেয়ে যাবে৷ আরেকটা জিনিসের ওপর জোর দেওয়া যেতে পারে তা হল sensory play৷ নানা রকমের খেলা যেমন মাটি,ময়দার গোলা, slime, কিনেটিক sand দিয়ে৷ এই খেলা ঘিরে নানা রকম গল্প গড়ে তোলা যেতে পারে৷ সন্তানের সঙ্গে বসে নিজেও খেলুন এমন খেলা৷ অনাবিল আনন্দ পাবেন৷ শুরু করতে পারেন একসাথে গল্পের বই পড়া৷ এতেই দেখবেন দুদিন পর মোবাইলর চাইছে না৷
advertisement
২) যাদের বয়স ৭ বছরের ওপরে তাদেরকে নিয়মিত খেলতে দিন৷ Chess দিয়ে শুরু করতে পারেন৷ কিছু শারীরিক পরিশ্রমের খেলাও যেরকম একটু গান চালিয়ে ম্যাচিং স্টেপ অথবা যোগা করাতে পারেন৷ গল্প বই পড়া এবং তার বিশ্লেষণ নিয়ে সবাই একসাথে মজার ছলে বসতে পারেন৷
৩) ১০ বছরের ওপর যারা তাদেরকে দিন বাড়তি দায়িত্ব৷ বাড়িতে সবাই হাত ধুচ্ছে কিনা , এরা নজরে রাখুক৷ এতে দায়িত্ববোধের সঙ্গে বাড়বে দক্ষতাও৷ যারা আছে বয়োসন্ধিক্ষণে তাদেরকে সামলানো বেশি মুশকিল৷ বিশেষত যদি মোবাইলের আসক্তি থাকে৷ বাড়ির কাজের যোগদান আবশ্যিক করুন৷ একটি বিশেষ কোনও দায়িত্ব দিতে পারেন৷ ভাল গল্পের বই দিতে পারেন৷ একসঙ্গে সিনেমা দেখুন সেটা সত্যজিৎ থেকে হিচকক যা খুশি হোক না৷
শেষে আসা যাক খাওয়া-দাওয়ার কথায়৷ বাড়িতে তৈরি হালকা পাতলা খাওয়ার দিন৷ সেটা হোক প্রোটিন যুক্ত৷ একটু রঙিন করে তুলুন স্যালাড ও মরশুমি ফল ও তরকারি দিয়ে৷ বাড়িতে বানানো লেবুর জল একটু সাজিয়ে মকটেল হিসেবে দিন৷
৪) এছাড়াও যাদের সন্তানরা অটিজম বা ADHD-র শিকার, এই মুহূর্তে সমস্ত থেরাপি বন্ধ৷ অভিভাবকদের দিশেহারা অবস্থা৷ খুব অসহায় অবস্থায় যোগাযোগ করুন আপনাদের শিশুর থেরাপিস্টদের সঙ্গে৷ তাদেরকে এক সপ্তাহ করে হোমপ্ল্যান করে দিতে বলুন৷ সেই অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যান বাড়িতে৷
সবশেষ ডঃ চৌধুরি জানাচ্ছেন যে 'ভালো থাকুন, সাবধানতা অবলম্বনে ত্রুটি রাখবেন না৷ অযথা ভয় পাবেন না৷ বাড়িতে সন্তানের সঙ্গে পাওয়া সময় সুন্দর ভাবে কাটান৷ সময় কঠিন, কিন্তু ভরসা রাখুন, ভোরের উদয়ও অবসম্ভাবী৷'