সিকে বিড়লা হাসপাতালের ডাঃ অঞ্জলি কুমার, MBBS, MD (Obstetrics & Gynaecology), FICMCH, FMAS) জানান, পিসিওএস হলে অনিয়মিত ঋতু, হাইপারটেনশন, শরীর বা মুখে বাড়তি রোম, অ্যাকনে এবং চুল পড়া- এই লক্ষণগুলি দেখা যায়। সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ফলে এই রোগ দেখা যায়। সুতরাং একে একটি লাইফস্টাইল ডিজিজ বা জীবনযাত্রাজনিত রোগ বলা যেতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা হলে, ধূমপান করলে, মানসিক চাপ বা পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এটি দেখা যায়।
advertisement
পিসিওএস (Polycystic Ovary Syndrome)-এর কিছু প্রাথমিক লক্ষণই কিন্তু আপনার জন্য রেড অ্যালার্ট। অর্থাৎ আপনাকে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সেগুলো কী?
১. অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ঋতুচক্র দেরিতে শুরু হওয়া, খুব পরিমিত স্রাব হওয়া ইত্যাদি। যদি ঋতুস্রাব প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ২১ দিনের আগে বা ৩৫ দিন পরে শুরু হয় এবং কিশোরীদের মধ্যে যদি তা ৪৫ দিনে গিয়ে দাঁড়ায় তা হলে অবশ্যই সেটা দুশ্চিন্তার বিষয়।
২. দেখা গিয়েছে ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ মহিলারা পিসিওএস-এ ভোগেন অতিরিক্ত ওজনের জন্য। স্থূলতা এর একটি অন্যতম কারণ। ওজন এ ক্ষেত্রে কিছুতেই কমতে চায় না।
৩. গর্ভধারণে অসুবিধা।
৪. অতিরিক্ত মাত্রায় পুরুষ হরমোন নিঃসরণের ফলে অ্যাকনে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ বিশেষ করে মুখ রোমশ হয়ে যাওয়া।
৫. চুল পড়া ও স্কাল্পে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।
৬. টাইপ ২ ডায়াবেটিস, স্বাভাবিকের চেয়ে শরীরে বেশি মাত্রায় চিনির প্রকোপ।
৭. উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের আধিক্য।
৮. ঘন ঘন মুড পরিবর্তন, মানসিক অবসাদ, আত্মবিশ্বাসের অভাব, অস্থিরতা
পিসিওএস নির্ণয়:
কোনও পরীক্ষার মাধ্যমে আলাদা করে পিসিওএস নির্ণয় করা যায় না। স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞরা এই রোগ নির্ণয় করতে কয়েকটি পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। সেগুলি হল:
১.ক্লিনিকাল ইতিহাস ও পরীক্ষা
২. রক্ত পরীক্ষা
৩. আলট্রা সাউন্ড
পিসিওএস নিয়ন্ত্রণের উপায়:
১. পিসিওএস নিয়ন্ত্রণের সেরা উপায় হল স্বাস্থ্যকর ও সুষম জীবনযাপন। আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাবার খান, নিয়মিত ব্যায়াম করেন, প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলেন, নিজের খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তা হলে অবশ্যই এটি কমে যাবে।
২. প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করার চেয়ে ভাল পন্থা আর হয় না। ব্যায়াম করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শারীরিক কসরত করলে আপনাকে আর ইনসুলিন নিতে হবে না এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৩. অন্ততপক্ষে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম। পর্যাপ্ত ঘুম অনেক ক্ষেত্রেই পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪. বর্তমান পরিস্থিতিতে মানসিক চাপ আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে। কিন্তু আপনাকে পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে মানসিক চাপ কমাতে হবে। কিছু ভাল লাগার বা ভালবাসার জিনিসের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখুন। দেখবেন চাপ অনেক কমে গিয়েছে।