আঠারোশো শতক–খনিকর্মীদের পোশাক:
সেই সময় শ্রমিক, খনিকর্মী এবং স্বর্ণের খনিকর্মীদের পোশাক ছিল ডেনিম। প্রথমদিকে কাজের সময় তাঁরা সুতির প্যান্ট পরতেন। কিন্তু সেই পোশাক এবং পকেট বার বার ছিঁড়ে যেত বলে অভিযোগ আসত। ফলে Loeb Strauss নামে এক ব্যক্তি একটি শক্তপোক্ত এবং টেকসই প্যান্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। এরপর Straus নিজের নাম Loeb থেকে বদলে রাখেন Levi। তখনই তৈরি হয় বিখ্যাত ব্র্যান্ড Levi Strauss & Co।
advertisement
১৯৩০ থেকে ৪০-এর দশক — কাউবয় কালচার:
জিন্স সমাজ এবং পপ কালচারে এক নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। সেই সময়টায় মানুষ অবসর সময়ে বিনোদনের জন্য সিনেমা দেখতেন। সেই সমস্ত ছবিতে কাউবয়দের দুর্ধর্ষ দুঃসাহসিক রূপে দেখা যেত। তারা খারাপ মানুষদের মারতেন। তাদের পরণে থাকত নীল রঙা জিন্স। তখন থেকেই ক্যাজুয়াল রাগড কাউবয় লুকের জন্য তরুণ এবং মধ্যবয়স্ক পুরুষরা জিন্স বেছে নিতে শুরু করেন।
১৯৫০-এর দশক — যেন এক বিদ্রোহের প্রতীক:
১৯৫০-এর দশকে তরুণরা প্রথম নিজেদের প্রজন্মের প্রতীক হিসেবে জিন্স বেছে নিলেন। সেই সময় মার্লন ব্র্যান্ডো এবং জেমস ডিনের মতো তরুণ মার্কিন তারকাদের দেখেই সকলে জিন্স পরতে শুরু করেন। ১৯৫০-এর মাঝামাঝি জেমস ডিন রেবেল উইদাউট আ কজ-এ একটি Lee 101 Riders পরেছিলেন। ফলে কুলনেসের সঙ্গে জিন্সের মেলবন্ধন তৈরি হয়েছিল। এমনকী জিন অট্রি, মেরিলিন মনরো এবং স্যান্ড্রা ডি-এর মতো অভিনেত্রীদেরও জিন্সে দেখা যেত।
১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশক — হিপ্পি যুগ:
১৯৬০-এর দশকে হিপ্পি আন্দোলনের সময় যুদ্ধ-বিরোধী আন্দোলনের ভার্চুয়াল ইউনিফর্ম হয়ে উঠেছিল জিন্স। যদিও সেই দশকের ফ্যাশন ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তা মডিফাই করা হয়েছিল। সাইকেডেলিক কালার, এমব্রয়ডারি ও কাট-অফ, বেল-বটম এবং স্টোন-ওয়াশড স্টাইল ছিল নতুন উদ্ভাবন।
১৯৮০-এর দশক — ডিজাইনার ডেনিম:
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে ঝড় তুলেছিল ডেনিম। ফ্যাশন ডিজাইনাররাও লুফে নিয়ে নিজেদের মতো করে ডিজাইন করতে লাগল ডেনিম। ১৯৮১ সালে Calvin Klein নিজেদের জিন্স ব্র্যান্ড চালু করল। এর পরের উদ্ভাবন ছিল ওয়ার্ন-আউট লুক। আশির দশকেই রিপড জিন্স এবং রঙিন (সাদা এবং গোলাপি) জিন্সের জন্ম হয়েছিল।
১৯৯০-এর দশক — পতন এবং পুনরুত্থান:
এই সময়ে তরুণদের মধ্যে এই জিন্সের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। কারণ, মা-বাবাদের জিন্স পরতে দেখে তরুণরা আর জিন্স পরতে চাইছিল না। একটু আলাদা লুকের জন্য তারা খাকি, কার্গো এবং ব্র্যান্ডেড স্পোর্টসওয়্যারের দিকে ঝুঁকতে শুরু করল। এই সময়টায় ডিজাইনাররাও জিন্সের সঙ্গে অন্য ফেব্রিক ব্লেন্ড করতে শুরু করেন। লাইক্রা, স্ট্রেচ জিন্স তো বটেই, সেই সঙ্গে লাল, সবুজ এবং ইন্ডিগো রঙা ব্যাগি জিন্সও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে এল।