তবে অতিরিক্ত ডাল খেয়ে ফেললে আবার বিপদ। কারণ অনেকেই হয় তো জানেন না যে, কয়েকটি ডাল রয়েছে, যা খেলে গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দেখা দেয়। কারণ ওই ডালগুলি এতটাই ভারী যে, সহজে হজম হতে চায় না। ফলে পেটে অস্বস্তি শুরু হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা সব সময়ই বলে থাকেন যে, ডাল রাতের খাবারের তালিকায় নয়, বরং দুপুরের খাবারের পাতেই রাখা উচিত। আজ এই ধরনের চারটি ডালের প্রসঙ্গে আমরা কথা বলব, যা গ্যাস, অম্বলের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে অবশ্য খেতে ভালোবাসলে তো আর কিছু করার নেই। সে-ক্ষেত্রে সমস্যা এড়ানোরও কিছু উপায় রয়েছে। যে বিষয়েও আলোচনা করব আমরা।
advertisement
আরও পড়ুন: দীপাবলিতে স্বস্তি পেল কলকাতা, কিন্তু ঘনাচ্ছে বড় বিপদ! চিন্তায় পরিবেশবিদরা
মটর ডাল:
মটর ডাল সবথেকে স্বাস্থ্যকর ডালের মধ্যে অন্যতম। এটি প্রোটিন এবং ফাইবারে ভরপুর। ফলে এটি হজম হতেও বেশি সময় লাগে। যাতে এই ডাল খেয়েও গ্যাস কিংবা অম্বলের মতো সমস্যা দেখা না-যায়, তার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, রান্না করার আগে মটর ডাল প্রায় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। আর এই ডাল হিং আর বেকিং সোডা দিয়ে রান্না করা উচিত। এতে পরিপাক ক্রিয়া আরও সহজ হয়। এই ডাল খেতে বড্ড সুস্বাদু, তাই এটা বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা দেখা যায়। সেটা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
বিউলির ডাল:
গোটাই হোক, কিংবা ভাঙা - বিউলির ডাল সবথেকে ভারী ডালগুলির মধ্যে অন্যতম। আর এই বিউলির ডালের আর এক নাম হল উরদ ডাল। যে-হেতু এই ভারী ডাল হজম হতে বেশি সময় লাগে, তাই গ্যাস কিংবা অম্বল হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, যাঁদের পরিপাক তন্ত্র দুর্বল, তাঁদের এই ডাল খাওয়া উচিত নয়। শুধু তা-ই নয়, যাঁরা হাত-পায়ের যন্ত্রণায় কাবু, তাঁদেরও এই ডাল খেতে নিষেধ করা হয়। এমনকী বদহজম এবং বাতের ব্যথায় জেরবার রোগীদেরও এই ডাল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর বিউলির ডাল রান্না করার আগে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা উচিত। এর পর ভিজিয়ে রাখা জলটা ফেলে দিয়ে ভাল করে হিং এবং ধনে গুঁড়ো দিয়ে রান্না করে নিতে হবে ডাল। যাঁরা পিঁয়াজ দিয়ে বিউলির ডাল রান্না করেন, তাঁদের কম পিঁয়াজ ব্যবহার করা উচিত। কারণ পিঁয়াজ থেকেও গ্যাস হতে পারে। তবে এই ডাল খেলেও তা ন’মাসে ছ’মাসে এক বারই খেতে হবে। ঘন-ঘন এই ডাল খেলে কিন্তু বিপদ বাড়বে!
আরও পড়ুন: 'প্রজাপতি' দিয়ে বক্ষবন্ধনী, পলকের থেকে পলক সরছে না ভক্তদের!
ছোলার ডাল:
লুচি মানেই নারকেল কুচি দিয়ে বেশ মিষ্টি মিষ্টি ছোলার ডাল। বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাবার এই লুচি-ছোলার ডাল। তবে এখানেও বিপদ! কারণ ছোলার ডাল খেতে যতই ভাল লাগুক না কেন, পেটে কিন্তু সব সময় সয় না! আসলে ছোলার ডাল পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও এটাও বেশ ভারী। ফলে হজম হতে সমস্যা দেখা যায় এবং তার জেরে গ্যাস হতে পারে। তাই ছোলার ডাল রাঁধার আগে এর সঙ্গে অল্প করে মুসুর ডাল মিশিয়ে নেওয়া উচিত। কারণ মুসুর ডাল সহজেই হজম হয়ে যায়। আর রান্না করার আগে ছোলার ডালটা প্রায় ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা মতো ভিজিয়ে রাখতে হয়। এর পর সেই জলটা ফেলে দিয়ে ডালটা সেদ্ধ করে তাতে মেথি যোগ করতে হবে। এতে স্বাদ তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে ডালের গ্যাস্ট্রিক ধর্মী উপাদানও দূর হবে। শুধু তা-ই নয়, ছোলার ডাল রাঁধার সময় ব্যবহার করতে হবে হিং, ধনে গুঁড়ো, মৌরি গুঁড়োও। এতে ডালের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি পেটের অস্বস্তিও দূর হবে।
অড়হড় ডাল:
ভাত কিংবা রুটির সঙ্গে অড়হড় ডালের কম্বো জাস্ট অসাধারণ। তবে এই ডাল বোধহয় সবথেকে ভাল যায় জিরা রাইসের সঙ্গে। আর অড়হড় ডালও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তবে বেশি খেলেই বিপদ। কারণ এতেও উপস্থিত থাকে গ্যাস্ট্রিক ধর্মী উপাদান। এই বিষয়টা কাটানোর জন্য অড়হড় ডাল রান্না করার সময় এর সঙ্গে সমপরিমাণ মুসুর ডাল যোগ করে নেওয়া উচিত। তাতে হজমের প্রক্রিয়া দ্রুত এবং সহজ হয়। তা-ছাড়া এই ডাল প্রায় ৩০ থেকে ৬০ মিনিট মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাতেও ডালের গ্যাস্ট্রিক ধর্মী উপাদান দূর হয়। এই ডাল রান্নার সময় হিং, গোটা ধনে এবং মেথি যোগ করা যেতে পারে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)