বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে বয়সকালে অনেক বেশি শ্রবণশক্তি হারানোর ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালে একটি Association for Research in Otolaryngology (JARO)-এর জার্নালে এক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছিল, যাঁরা ধূমপান করেন তাঁদের ক্ষেত্রে শ্রবণশক্তির হারানোর ঝুঁকি অন্তত ১.৬৯ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন- ‘ধাত্রী’-র ভূমিকায় পোষা সারমেয়! সন্তানের জন্ম দিলেন অটিজম আক্রান্ত তরুণী
advertisement
শুধু তাই নয়, কোনও ব্যক্তি প্রতিদিন কতগুলি সিগারেট খাচ্ছেন তার উপরও নির্ভর করে তাঁর শ্রবণশক্তি হারানোর প্রবণতা।
বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক মণিপাল হাসপাতলের নাক-কান-গলা বিভাগে চিকিৎসক ডা. গিরীশ রাইয়ের কাছ থেকে।
শ্রবণশক্তিহীনতা ও ধূমপানের যোগ—
প্রাপ্তবয়স্করা তো বটেই শিশুরাও ‘প্যাসিভ স্মোকিং’-এর কারণে এই ধরনের শ্রবণশক্তিহীনতায় ভুগতে পারে। কারণ ধূমপান গলা ও নাকের ভিতরে কোষের ক্ষতি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তার ফলে যেকোনও কানের অসুখ আরও মারাত্মক হয়ে যায়।
শিশুদের বিপদ কিন্তু বেশি। দেখা গিয়েছে, প্রায় ৭৭.৫ শতাংশ ধূমপায়ী এই সমস্যার শিকার। কিন্তু যাঁরা ধূমপায়ী নয় তাঁদের মধ্যে ১৮.৩ শতাংশ নিষ্ক্রিয় ধূমপানের শিকার।
ধূমপান রক্ত সংবহনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ফলে ককিলায় রক্ত প্রবাহ কমে গিয়েও শ্রবণযন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। তার উপর সিগারেটের বিষাক্ত অংশ যেমন নিকোটিন, কার্বন মোনোক্সাইড কানের ভিতরের রোমশ কোষের ক্ষতি করে। এই রোমশ অংশই শব্দের কম্পাঙ্ককে ইলেকট্রিক্যাল সিগনাল হিসেবে মগজে পাঠায়।
আরও পড়ুন- গপগপ করে তো ফুচকা খাচ্ছেন,বর্ষায় কতটা ঝুঁকি জানেন? রোগ বাসা বাঁধার আগে সাবধান!
এর সঙ্গে মিশে যায় স্বাভাবিক বয়সজনিত সমস্যা। ফলে সময়ের আগেই শ্রবণশক্তি হারাতে পারেন কেউ।
প্রতিকার:
ধূমপানের নেশা ত্যাগ করাই প্রথম এবং একমাত্র সমাধানের পথ। শ্রবণশক্তি হ্রাসের ক্ষেত্রে ধূমপান ত্যাগ করলে ইতিবাচক ফল মিলে থাকে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে।
কোনও ব্যক্তি ধূমপান ত্যাগ করলে প্রায় ৫০শতাংশ পর্যন্ত শ্রবণশক্তির হারানোর ঝুঁকি কমাতে পারেন।
এর বাইরে উচ্চ আওয়াজের মধ্যে থাকা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে, ইয়ারপ্লাগ ব্যবহার করতে হবে। মোবাইলে গান শোনার সময়ও হেডফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। নিয়মিত কানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।