সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পরেও নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত। করোনা পরবর্তী সমস্যা : চূড়ান্ত ক্লান্তি,অবসন্ন ভাব, বুক ধরফর,বুকে ব্যথা,শ্বাসকষ্ট,স্নায়ুর সমস্যা,মানসিক সমস্যা - দুশ্চিন্তা,অবসাদ,গা,হাত পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা।
হাওড়া সাঁতরাগাছির বাসিন্দা মৌসুমী ঘোষ, ৫২ বছর বয়স। গত ৫ মে করোনা আক্রান্ত হয়ে দু দুটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ৯ দিন হাসপাতালে থাকার পর ছাড়া পান। করোনা মুক্ত হওয়ার পরেও দুটি পা এবং ডান দিকের হাত জুড়ে তীব্র যন্ত্রণা। মৌসুমী দেবীর শ্বাসকষ্ট নেই,কিন্তু শরীরের দান দিকে অসহ্য যন্ত্রণা তাকে একেবারে কাবু করে ফেলেছে। মৌসুমী দেবী একা নন, এরকম বহু মানুষই নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর।
advertisement
উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা ৪২ বছরের সব্যসাচী চক্রবর্তী আবার তীব্র মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। গত বছরের জুন মাসে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠে এখনো মাঝেমধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখেন তিনি। তার বাবা বিমল চক্রবর্তী জানান," মাঝে মধ্যেই সারা রাত জেগে থাকে সব্যসাচী। আশপাশে কারোর করোনা হয়েছে শুনতে পেলেই আমার ছেলের ধারণা হয় যে ও নিজেও করোনা আক্রান্ত। শরীরে বেশি তাপমাত্রা না থাকা সত্ত্বেও মাঝেমধ্যেই ছেলে বলে ওঠে, যে ওর খুব জ্বর এসেছে।"
সম্প্রতি গোটা বিশ্ব জুড়েই করোনা মুক্ত হওয়ার পরে করোনা পরবর্তী পুনর্বাসন বা রিহ্যাবিলিটেশন এর কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের রাজ্যে পার্ক সার্কাস এর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হলো পোস্ট কোভিড রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিট। একই ছাদের তলায় ফিজিওথেরাপি থেকে শুরু করে কাউন্সেলিং, কার্ডিয়াক এবং চেস্ট রিহ্যাবিলিটেশন, মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা সবই থাকবে। চিকিৎসক মৌলি মাধব ঘটক এর তত্ত্বাবধানে গোটা ইউনিট কাজ করবে। চিকিৎসক মৌলি মাধব ঘটক জানান, "করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরেও সতর্ক থাকা উচিত। সব থেকে বড় কথা সামান্যতম সমস্যা হলেও এই ধরনের কোভিড রিহ্যাবিলিটেশন অত্যন্ত উপযোগী হবে। একই ছাদের তলায় ফিজিওথেরাপি ইউনিট , ফুসফুস বিশেষজ্ঞ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সমস্ত ধরনের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুবন্দোব্যস্ত, সাইকোলজিস্ট সাইক্রিয়াটিস্ট থেকে শুরু করে কাউন্সিলর, এমনকি ফিজিক্যাল মেডিসিন এর পক্ষ চিকিৎসক থাকবে এই রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে।"