আসলে বিশ্বব্যাপী নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার জন্য দায়ী স্নায়বিক রোগ। এর পরিসংখ্যান শুনলেই সমস্যার গভীরতাটা বোঝা যাবে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের স্নায়বিক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দশ লক্ষেরও বেশি। আর প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ এই ধরনের রোগের বলি হয়ে থাকে। তাই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করছেন বেঙ্গালুরুর অ্যাস্টার সিএমআই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট চিকিৎসক রবি কুমার সিপি।
advertisement
আরও পড়ুন: ঘাড়ের পিছন থেকে মাথা ব্যথা করে! এই রোগটি বাসা বাঁধেনি তো আপনার শরীরে? জানুন
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপরে প্রভাব ফেলে নানা বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্যাক্টর। স্নায়ুর কলাকোষের আয়ু, বৃদ্ধি ও কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে কিছু অভ্যন্তরীণ বা ইন্টারনাল ফ্যাক্টর। যা নিউরোট্রফিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। এগুলি হল সক্রিয় প্রোটিন। এছাড়া রয়েছে বাহ্যিক কিছু ফ্যাক্টর। এর মধ্যে অন্যতম হল মানসিক চাপ বা স্ট্রেস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, মস্তিষ্ক অথবা শিরদাঁড়ার কোনও আঘাত এবং পরিবেশ দূষণ।
সেলুলার স্তরে নিউরোলজিক্যাল রোগের অন্যতম মূল কারণ হল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস। দেহে ফ্রি-র্যাডিক্যাল বৃদ্ধি পেলে ক্রনিক ইনফ্লেমেশন হতে পারে। যার জেরে অক্সিজডেটিভ স্ট্রেস দেখা দিতে পারে। যা কোষের পর্দা এবং লিপিড, লাইপোপ্রোটিন ও নিউরোট্রফিক উপাদান-সহ অন্যান্য প্রোটিনের গঠন বদলে দেয়।
ভাল ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বা ডায়েটের মাধ্যমে প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আসলে এই প্রদাহই নিউরোলজিক্যাল রোগের অন্যতম মূল উপাদান। ফল, সবজি, বাদাম, মশলা এবং ভেষজ জাতীয় খাবারে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এর মধ্যে অন্যতম হল ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, পলিফেনল, ভিটামিন এবং মিনারেল। এই ধরনের খাবার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কারণ তা প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও সহায়ক।
অন্য দিকে, প্রক্রিয়াজাত ও উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার, রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট এবং রেড মিট এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এটা প্রদাহ বৃদ্ধি করে এবং ক্রনিক স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আধুনিক স্ন্যাকসে ব্যবহৃত প্রিজারভেটিভ, ইমালসিফায়ার এবং বিভিন্ন বাল্কিং এজেন্টের কারণে দেহে প্রদাহ বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি। এমনকী বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যাঁরা লো-ফ্যাট এবং উচ্চ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খান, তাঁদের রোগের ঝুঁকি কম।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য:
প্রতিদিন ৫টি করে ফল অথবা সবজি খাওয়া উচিত।
উপোস করলে অসুবিধা নেই। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ডায়েটে ভেষজ এবং মশলা যোগ করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হল হলুদ এবং আদা।
তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে।