বৃষ্টির সঙ্গে বর্ষায় আবার ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া এবং জিকার মতো মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। যদিও গ্রীষ্মের দাবদাহ এবং ধুলাবালি থেকে বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে আসে, কিন্তু এই সময়ই প্রচুর সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একইসঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় হজম ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।
ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া
ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া, মশা-বাহিত দুই রোগেই বেশি তাপমাত্রার জ্বর, জয়েন্ট ও পেশিতে ব্যথা, র্যাশ ইত্যাদির মতো উপসর্গ থাকে । ২০১৬ সালে সারা পৃথিবীতে যেখানে ৩.৩৪ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, সেখানে ২০১৭ সালে ২১৯ মিলিয়ন মানুষের ম্যালেরিয়া হয়। তাই বর্ষায় রোগের হাত থেকে বাঁচতে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। সেক্ষেত্রে ঢাকা জায়গায় জল রাখুন এবং সেই জল যাতে ঘন ঘন বদলানো হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অস্বাস্থ্যকর জল খাওয়া চলবে না এবং ফুল-হাতা জামা পরতে হবে। মশার দূষক ব্যবহার করারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
advertisement
ডায়রিয়া
এটি একটি অন্ত্রের সংক্রমণ। এই রোগটিতে পাতলা জলের মতো মল, জ্বর, বমি বমি ভাব, পেটে বাধা, প্রস্রাবে রক্ত ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে বর্ষায় ফল ও শাকসব্জি ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে। বেশি ফ্যাট ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি পরিষ্কার পানীয় জল খেতে হবে এবং জীবাণু থেকে বাঁচতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত।
জন্ডিস এবং টাইফয়েড
জন্ডিসে লিভারে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। অন্যদিকে, স্যালমোনেল্লা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার কারণে টাইফয়েড হয়। জন্ডিসে লোহিত রক্ত কণিকা কমে যায়, যা একজন ব্যক্তিকে ম্যালেরিয়া, সিকেল সেল অ্যানিমিয়া এবং অন্যান্য অটোইমিউন রোগের জন্য আরও বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। ভালো করে স্যানিটেশন এবং পরিষ্কার পানীয় জল খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বমি বমি ভাব থাকলে কখনও কখনও অ্যান্টি-অ্যালার্জিক, অ্যান্টিমেডিকস ওষুধ খেতে পারেন। তবে পেইনকিলার খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
নিউমোনিয়া
বাতাসে ভেসে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস নিশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে নিউমোনিয়া হয়। এক্ষেত্রে রোগীর শরীরে বুকে ব্যথা, দুর্বলতা, মানসিক সচেতনতায় পরিবর্তন, বমি বমি ভাব, বমি, নিশ্বাসে কষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। ফুসফুসকে ঠিক রাখতে অবশ্যই নিয়মিত হাত ধুতে হবে এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া ফল, সব্জি ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিয় এক্সারসাইজ করা জরুরি।