শ্রাবণ মাসে যখন বারমেরের জসদেসর ধাম ভক্তি ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ হয়, তখন সেখানকার এক কোণে বৃদ্ধা কমলা দেবী সুস্বাদু খাবারে ভরা দোকানটি খোলেন। চারটি সোমবার এবং হরিয়ালি তিজে এই দোকানটির জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় থাকে এবং অনেক সময় কমলার নিজের হাতে তৈরি জিনিসপত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায়। লাল মশলাদার কোফতার সুবাস এবং শুকনো ফলভরা ভরা লঙ্কার বড়ার বিশেষ স্বাদ সকলকেই আকর্ষণ করে।
advertisement
কমলা দেবীর স্বামী একসময় বারমেরে একটি খাবার দোকান চালাতেন। কিন্তু ৩৮ বছর আগে তাঁর মৃত্যুর পর যখন কমলা দেবীর উপর পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে, তখন তিনি নিজেই কোমর বাঁধেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি মাথায় ঝুড়ি নিয়ে লঙ্কার বড়া এবং কোফতা বিক্রি করতেন। তিনি প্রতিদিন প্রায় ২৫ কিলোমিটার হেঁটে মানুষের কাছে নিজের তৈরি খাবার বিক্রি করতেন। একসময় হাঁটুর ব্যথার জন্য আর খাবার ফেরি করতে পারতেন না, তখন জসদেসর ধামের মহন্ত প্রতাপ পুরী তাঁকে মন্দিরের সামনে একটি দোকান খোলার জন্য জায়গা দেন।
এখন শ্রাবণের চারটি সোমবার এবং হরিয়ালি তিজের দিনে কমলা দেবী জসদেসর ধামের সামনে তাঁর দোকান দেন। তাঁর দোকানে কোফতা, মিরচি বড়া, কচোরি, ফারালি, আলু পাপড়ি এবং সাগর কোফতার মতো আইটেম পাওয়া যায়। তিনি বলেন, সারা বছরে এই ছয় দিন কঠোর পরিশ্রম করেন। একবার যে তাঁর খাবার খেয়েছে, সে বার বার ফিরে আসবে। কমলার হাতের গুণ এখন আর কেবল খাবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং কঠোর পরিশ্রম, সংগ্রাম এবং আত্মসম্মানের গল্পে পরিণত হয়েছে।