একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, ডিমে রয়েছে নাইট্রোফিউরান মেটাবোলাইটস (AOZ), যা একটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ৷ FSSAI এই দাবিগুলিকে বিভ্রান্তিকর, বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন এবং অপ্রয়োজনীয় ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী বলে উল্লেখ্য করেছে৷ কোনও জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা কখনই বলেনি স্বাভাবিকভাবে ডিম খাওয়ার সঙ্গে ক্যানসারের বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে, শনিবার জানাল FSSAI৷
advertisement
এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘এগোজ়’ (Eggoz)-এর ডিমের একটি নির্দিষ্ট ব্যাচ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট, যেখানে নিষিদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিক গোষ্ঠী নাইট্রোফিউরানের সামান্য অবশিষ্টাংশ পাওয়ার অভিযোগ করা হয়। FSSAI কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করেছে যে, খাদ্য নিরাপত্তা ও মান (দূষক, বিষাক্ত পদার্থ ও অবশিষ্টাংশ) বিধিমালা, ২০১১ অনুযায়ী পোলট্রি উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে—এমনকি পশুখাদ্যেও—নাইট্রোফিউরানের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর আগেই, চলতি সপ্তাহে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের মান নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক দপ্তরগুলিকে সারা দেশে ব্র্যান্ডেড ও আনব্র্যান্ডেড ডিমের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিল।
সংস্থার ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে যে, নাইট্রোফিউরান মেটাবোলাইটসের জন্য ১.০ মাইক্রোগ্রাম/কেজি (μg/kg) মাত্রার একটি এক্সট্রেনিয়াস ম্যাক্সিমাম রেসিডু লিমিট (EMRL) নির্ধারিত রয়েছে। তবে এই সীমা শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রক প্রয়োগের জন্য একটি মানদণ্ড, কোনওভাবেই এটি ওষুধটির ব্যবহারের অনুমোদন বা নিরাপত্তা সীমা নয়। এই মাত্রা আধুনিক পরীক্ষাগারে সনাক্তযোগ্য সর্বনিম্ন স্তরকে নির্দেশ করে। FSSAI জোর দিয়ে বলেছে, এই EMRL-এর নিচে অতি সামান্য অবশিষ্টাংশ ধরা পড়লে তা খাদ্য নিরাপত্তা লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয় না এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য কোনও ঝুঁকির ইঙ্গিতও দেয় না। এই পদ্ধতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে এই ধরনের মানকে ‘অ্যাকশন ট্রিগার’ হিসেবে ধরা হয়, খাবারকে অনিরাপদ বলার সূচক হিসেবে নয়।
একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডে দূষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে FSSAI জানিয়েছে, বিচ্ছিন্ন পরীক্ষাগার ফলাফল প্রায়শই নির্দিষ্ট ব্যাচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে এবং তা অনিচ্ছাকৃত দূষণ বা বিশেষ ধরনের পশুখাদ্যের কারণে ঘটতে পারে। গোটা দেশের ডিমের সরবরাহকে অনিরাপদ বলে দাগিয়ে দেওয়া বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। বিবৃতির শেষে FSSAI গ্রাহকদের আতঙ্ক ছড়ানো ডিজিটাল কনটেন্টের বদলে বিজ্ঞানভিত্তিক পরামর্শের উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে, ডিম এখনও একটি সুষম খাদ্যের অপরিহার্য ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ উপাদান হিসেবেই রয়ে গিয়েছে।
