সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে এমবিবিএস চিকিৎসক ড. আদিতিজ ধামিজা জানিয়েছেন, যদি কেউ নিয়মিত মহল্লার পার্লারে গিয়ে আইব্রো বানান, তাহলে একটু সচেতন হওয়া জরুরি। তিনি বলেন, এক তরুণী আইব্রো বানাতে গিয়েছিলেন এবং ফেরত এলেন লিভার ফেল নিয়ে। এই ঘটনাটি ঘটেছে ২৮ বছর বয়সী এক তরুণীর সঙ্গে।
advertisement
ড. ধামিজা ইনস্টাগ্রামে তার একটি পোস্টে লেখেন, এই তরুণী আইব্রো বানাতে পার্লারে গিয়েছিলেন, কিন্তু ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যেই তাকে ক্লান্তি, বমি ভাব ও চোখে হলুদ ভাব দেখা যায়। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার লিভার কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, ওই তরুণী মদ্যপান করতেন না, না কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল। বরং পার্লারে থ্রেডিং করাতে গিয়েই এমন পরিণতি হয়।
কীভাবে সংক্রমণ ছড়াল: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিকিৎসকের মতে, একই থ্রেড বারবার ব্যবহারের ফলে ওই তরুণীর ত্বকে ছোট ছোট কাট লেগেছিল, যার মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাস রক্তে প্রবেশ করে। যদিও ড. ধামিজা সরাসরি এই রোগীর চিকিৎসা করেছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়, তবে তার বক্তব্য লিভার স্বাস্থ্য নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে।
আইব্রো থ্রেডিং সত্যিই বিপদজনক? জুপিটার হাসপাতাল, থানের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের ডিরেক্টর ড. অমিত সারাফ বলেন, থ্রেডিং নিজে থেকে লিভার ফেলের কারণ নয়। তবে যদি এটি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে করা হয়, তবে হেপাটাইটিস বি ও সি সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।
ড. সারাফ জানান, হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। থ্রেডিংয়ের সময় যদি ত্বকে সামান্য কাটা বা ঘা হয়, তবে তা ভাইরাস প্রবেশের দ্বার খুলে দিতে পারে। যে সুতো, হাত বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয় তা যদি আগে কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে, তবে তা ভাইরাস ছড়াতে পারে।
সংক্রমণ থেকে বাঁচতে করণীয়: ড. সারাফ বলেন, যদি হেপাটাইটিসের চিকিৎসা সময়মতো না হয়, তবে তা ধীরে ধীরে লিভারকে নষ্ট করতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে সিরোসিস বা লিভার ফেলিউরের কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, “থ্রেডিং নিজে লিভারের জন্য ক্ষতিকর নয়, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তা বিপজ্জনক হতে পারে।”
তাই সবসময় নিশ্চিত করুন যে থ্রেডিং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পেশাদার জায়গা থেকেই করানো হচ্ছে। নতুন ও ডিসপোজেবল সুতো ব্যবহার, হাত ধোয়া এবং থ্রেডিংয়ের আগ-পরে ওই অংশটি স্টেরিলাইজ করা জরুরি। যদি সেখানে কাটা বা ত্বকে সংক্রমণ থাকে, তবে থ্রেডিং না করাই ভালো।
যারা নিয়মিত থ্রেডিং করান, তাদের উচিত ঝুঁকিগুলো জানা এবং শুধুমাত্র অভিজ্ঞ ও স্বাস্থ্যবিধি মানা থেরাপিস্টের কাছেই যাওয়া।