তাঁর অভিযোগ, পাঁচিল তুলেই দায়িত্ব শেষ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রত্নতত্ত্ব দফতর। কিন্তু অসমাপ্ত খনন সম্পূর্ণ না হলে, প্রত্নবস্তু ফিরিয়ে এনে স্থানীয় সংগ্রহশালা না হলে এ অঞ্চলের প্রকৃত ইতিহাস কেউ জানতে পারবে না। তিনি জানান, দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৪৫০০ এর বেশি প্রত্নসামগ্রী,১৪টি প্রস্তরলিপি, ১১টি বিশালাকৃতি নরকঙ্কাল, কলসসমাধি সবই এখানে ফিরিয়ে আনার দাবি দীর্ঘদিনের। এই বিষয়ে রাধামাধব মণ্ডল বলেন, “ভারত সরকারের কোনও ওয়েবসাইটে সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ নেই যে পাণ্ডুরাজার ঢিবি থেকে কী কী উদ্ধার হয়েছে। সবটা জনসমক্ষে আনার আমরা একটা দাবি জানাই। এখানে একটা আর্ট গ্যালারি করা হোক। বার বার আবেদন জানানোর পর বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এটা যেন ইতিহাস চাপা দেওয়ার একটা চেষ্টা চলছে।”
advertisement
আরও পড়ুন : চোখ মেললেই কাঞ্চনজঙ্ঘা! পা ফেললেই নেওরা নদী! চাবাগানে অনাবিল সৌন্দর্যের ঠিকানা ডুয়ার্সের ছাওয়াফেলি
আউশগ্রামের রামনগরের, পাণ্ডুক গ্রামের রসফাল্লা পুকুরপারের এই জমিটি স্থানীয়ভাবে রাজাপোঁতার ডাঙা নামে পরিচিত। আর এর পাশেই রয়েছে প্রাচীন জনপদের পাণ্ডুক গ্রাম। ১৯৬২ থেকে ৬৫ এবং ১৯৮৫, এই পাঁচ দফা খননে এক জায়গায় পাঁচটি সভ্যতার চিহ্ন পাওয়াটাই এই স্থানের বিশেষত্ব। প্রায় ৭৫০০ বছর আগে থেকে এই জায়গায় মানববসতির প্রমাণ মিলেছে। যা এই অঞ্চলকে ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও ধারাবাহিক জনপদ হিসেবে চিহ্নিত করে। এদিন পাণ্ডুরাজার ঢিবিতে এসে আইপিএস দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “যদি নিয়ম করে স্কুল কলেজ থেকে পড়ুয়াদের নিয়ে এসে তাদের এই পুরোনো ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয় তাহলে আমার মনে হয় সবাই উপকৃত হবে। এত প্রাচীন ইতিহাস এই জায়গায় আর কোথাও নেই, সেক্ষেত্রে পাণ্ডুরাজার ঢিবির গুরুত্ব অসীম।”
স্থানীয়দের মতে, পর্যাপ্ত আলো, নিরাপত্তা, পানীয়জল, প্রসাধন কক্ষ, অতিথিশালা সব মিলিয়ে যদি পর্যটন পরিকাঠামো তৈরি করা যায়, তবে পাণ্ডুরাজার ঢিবি হয়ে উঠতে পারে পূর্ব ভারতের এক প্রধান অন্যতম ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র। রাধামাধব বাবুর মতে, সকলে যদি এই এলাকার ইতিহাসকে জানতে পারে তাহলে গোটা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাস সম্বন্ধে ধারণাটাই বদলে যাবে। তিনি ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট বিষয়ে সমস্ত সরকারি দফতরে দাবিপত্র পাঠিয়েছেন। তবে তাতে উত্তর না পাওয়া গেলে বা কোনও কাজ না হলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন।