অ্যালকোহলিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি কী?
অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে হাইপারটেনশন হয়, যা হৃদযন্ত্রের পেশি দুর্বল করে দেয়। ফলে হার্ট সঠিক ভাবে রক্ত পাম্প করতে পারে না। দীর্ঘ দিন এর চিকিৎসা না-হলে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে। যদি দীর্ঘ সময় ধরে মদ্যপান করা হয়, তা-হলে কার্ডিওমায়োপ্যাথি শুরু হয়। এতে হৃদযন্ত্রের পেশি অস্বাভাবিক রকম বৃদ্ধি পায়। এই রোগের উপর সময়ে নজর দেওয়া না-হলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। কারণ এর জেরে অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সমস্যা দেখা দেয়। মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে এবং ৩৫ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে যাঁরা ৫ থেকে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করেছেন, তাঁদেরই এই রোগের ঝুঁকি বেশি।
advertisement
আরও পড়ুন- স্ত্রীর কাছে ভরণপোষণ চাইতে পারেন না সমর্থ পুরুষ, সাফ জানাল আদালত!
রোগ লক্ষণ:
অ্যাডভান্সড স্টেজেই এর উপসর্গ প্রকাশ পায়। দেখে নেওয়া যাক, এই রোগের কিছু উপসর্গ।
ক্লান্তি বা অবসাদ
পরিশ্রম কিংবা বিশ্রামের সময় শ্বাসকষ্ট
পা, পায়ের পাতা এবং গোড়ালি ফুলে ওঠা
প্রস্রাবের ক্ষেত্রে পরিবর্তন
ক্ষুধার অভাব
মনোযোগে সমস্যা
দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, অচৈতন্য হয়ে পড়া, মাথা হালকা হয়ে আসা
পালস দ্রুত ওঠা-মনামা
কাশি এবং শোওয়ার সময় কাশি হলে গোলাপি মিউকাস নিঃসরণ
ফ্লুইডের কারণে পেট ফুলে যাওয়া
বুকে ব্যথা
রোগের কারণ:
জিনগত অবস্থা
দ্রুত হৃদস্পন্দন ও দীর্ঘ দিনব্যাপী রক্তচাপ
হার্টের ভালভে সমস্যা
পূর্ববর্তী অ্যাটাকের জেরে হার্ট টিস্যুর ক্ষতি
অতিরিক্ত মদ্যপান এবং মাদক সেবন
ওবেসিটি, থাইরয়েড ও অন্যান্য সমস্যা
প্রেগনেন্সিতে জটিলতা
রোগ নির্ণয়ের উপায়:
বুকের এক্স-রে
কার্ডিয়াক এমআরআই এবং হার্টে ব্লকেজ ও অন্যান্য অস্বাভাবিকতা ধরার জন্য ইকোকার্ডিওগ্রাম
ট্রেডমিল স্ট্রেস টেস্ট
কার্ডিয়াক ক্যাথিটারাইজেশন
সিটি স্ক্যান
রক্ত পরীক্ষা
জিনগত পরীক্ষা
চিকিৎসার বিকল্প
ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে প্রথমে ওষুধ দিয়ে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক করার চেষ্টা চালানো হয়। না হলে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন।
রেস্ট্রিকটিভ কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে রক্তচাপ কমানোর ওষুধ দিতে পারেন ডাক্তারবাবু।
জটিল কার্ডিওমায়োপ্যাথির ক্ষেত্রে ভেন্ট্রিকুলার অ্যাসিস্ট ডিভাইস অথবা হার্ট প্রতিস্থাপনের পরামর্শই দেওয়া হয়।
রোগের ঝুঁকি কমানোর উপায়:
অ্যালকোহল সেবনের অভ্যেস নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
সোডিয়াম খাওয়ার অভ্যেস কমাতে হবে।
হার্টের উপর চাপ কমাতে ফ্লুইড পানের অভ্যেস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নিয়মিত এক্সারসাইজ আবশ্যক।
চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, প্রসেসড ফুড এবং ধূমপানে রাশ টানতে হবে।
স্বাস্থ্যকর বিএমআই বজায় রাখা উচিত।
কী করণীয়?
কিছু সমীক্ষা বলছে, বিঞ্জ ড্রিঙ্কিং কিংবা মাঝেসাঝে মদ্যপান হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। যদিও তা এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। এতে হার্টের রোগের ঝুঁকি কমে। এর পরিবর্তে বরং যোগাভ্যাস করতে হবে, তা শরীরের পক্ষে ভাল। নিয়মিত এক্সারসাইজ, স্বাস্থ্যকর ডায়েট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।