১৪৬ কেজি ওজনের ৪৪ বছরের এক মহিলা, যিনি মাটিতে দাঁড়িয়ে দুই কদমও হাঁটতে পারছিলেন না এবং হার্ট ফেল, লিভার সিরোসিসের পর ধীরে ধীরে কিডনি ফেইলিওরের দিকে যাচ্ছিলেন—অবশেষে তাঁকে বাঁচিয়ে তুললেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: অজান্তেই আপনার শরীরে ঢুকছে নকল পনির, ভেজাল মশলা ও কীটনাশকে ভর্তি সবজি! সতর্ক না হলে কী কী হবে জানুন…
advertisement
দিল্লির সঙ্গম বিহার এলাকার বাসিন্দা রোগী রিঙ্কি এখন ডাক্তারদের প্রতি কৃতজ্ঞতায় ভরপুর। উল্লেখ্য, তাঁর ওজন ছিল ১৪৬.৫ কেজি এবং বিএমআই ৮০.৪। সাধারণভাবে ৬০-এর বেশি বিএমআই অতি বিপজ্জনক ধরা হয়, যা থেকে স্থূলতাজনিত একাধিক গুরুতর রোগ দেখা দেয়। তবে AIIMS-এর চিকিৎসকরা হাই রিস্ক থাকা সত্ত্বেও জটিল স্লিভ গ্যাস্ট্রেক্টমি সার্জারি করে শুধু ওজন কমাননি, বরং কিডনি ফেইলিওরের দিক থেকে তাঁকে ফের সুস্থতার পথে ফিরিয়ে আনেন।
AIIMS-এর সার্জারি বিভাগের অ্যাডিশনাল প্রফেসর এবং বেরিয়াট্রিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ড. মঞ্জুনাথ মারুতি জানান, এই কেসটি “সুপার-সুপার স্থূলতা”র ক্যাটেগরিতে পড়ে, যেখানে বিএমআই ৬০-এর বেশি হয় এবং রোগীর প্রাণঘাতী ঝুঁকি তৈরি হয়। এই রোগীর ওজন প্রায় ১২ বছর ধরে ক্রমাগত বাড়ছিল।”
আরও পড়ুন: অতি সস্তার এই বিশেষ আটা দিয়েই বানিয়ে ফেলুন নরম ও ফোলা তুলতুলে রুটি! জানুন সেই সহজ রেসিপি…
তিনি আরও জানান, প্রায় এক মাস আগে ওপিডিতে রোগী হুইলচেয়ারে করে আসেন, শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল, অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটজনক। হিস্ট্রি খতিয়ে দেখে জানা যায়, AIIMS-এ আসার আগে তিনি সাফদরজং হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং অক্সিজেন থেরাপিতে ছিলেন। তিনি মারাত্মক স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগছিলেন, হাইপারটেনশন ও টাইপ-টু রেসপিরেটরি ফেলিওর ছিল। তিনি হার্ট অ্যাটাকও করেছিলেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। রোগীকে ৯০ শতাংশ সময় ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল এবং সিপ্যাপ থেরাপিও দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁকে আরএমএল পাঠানো হলেও হাই রিস্ক থাকায় সেখান থেকে AIIMS-এ রেফার করা হয়।
প্রথমে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করে স্থিতিশীল করা হয়। ঘণ্টাখানেক পর্যবেক্ষণের পর বোঝা যায় যে অতিরিক্ত স্থূলতার কারণেই হার্ট ফেল, লিভার সিরোসিস এবং কিডনি ফেইলিওরের মতো জটিল সমস্যা হচ্ছে। তবে স্থূলতা দূরীকরণ সার্জারির পর কিডনির অবস্থার উন্নতি ঘটে।
রোগী পিঙ্কি জানান, তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তিনি দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারছিলেন না। কিন্তু এখন তিনি সুস্থ, উঠতে এবং হাঁটতে সক্ষম। তাঁর কথায়— “এইমসের ডাক্তাররা আমাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন।”