জানা গেছে, পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণা বিদের বয়স ৫১। দিব্যি সুস্থ ছিলেন। আচমকাই তাঁর শুরু তীব্র পেটের যন্ত্রনা শুরু হয়। এলাকার বিভিন্ন চিকিৎসককে দেখিয়ে অবশেষে উপস্থিত তিনি হন কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক উৎপল দের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন তিনি।
advertisement
সেখানেই প্রথম কৃষ্ণা বিদ জানতে পারেন তাঁর শরীরে অবস্থিত সকল অঙ্গই বিপরীতে অবস্থিত। এরই মধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন ওই রোগীর শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। কোলনে অবস্থান করছে সেই মারণ রোগ। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে তা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু যেহেতু শরীরের ভেতরের সব অঙ্গই বিপরীতে তা নিয়ে রয়েছেন চিন্তায়। সাধারণত এই সমস্ত ক্ষেত্রে রক্তবাহী নালিগুলো থাকে বিপরীতে। তাই অস্ত্রোপচারের আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয় চিকিৎসকদের।
অস্ত্রোপচারেও ছিল ঝক্কি। সেই অবস্থাতেই করা হয় তাঁর অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের সময়ে তাঁর শরীর থেকে বাদ দিতে হয়েছিল কোলনের একাংশ। চিকিৎসক উৎপল দে জানান, ‘ওনার ক্ষেত্রে অ্যানাটমিটা পুরোই বিপরীত থাকার জন্য অস্ত্রোপচারটা খুব চ্যালেঞ্জের ছিল। এই ধরণের কেসকে আমরা বলে থাকি সাইটার্স ইনভারসার্স৷’
চিকিৎসকের মতে এই বিপরীত অ্যানাটমির সঙ্গে কোলন ক্যান্সার পৃথিবীতে হাতে গোনা কয়েকজন জনের হয়েছে। গোটা ভারতের নিরিখে এই অস্ত্রোপচার দ্বিতীয়। কলকাতার অন্যতম সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করে জীবন ফিরে পেলেন কৃষ্ণা। তিনি জানান, ‘আমি এখানে এসেই জানতে পারি আমার সব অঙ্গ বিপরীতে। এখন সুস্থ আছি। রাতে ঘুম হচ্ছে, খেতে পারছি। বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি, চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাই।’
Onkar Sarkar