TRENDING:

নয়া কৃষি বিলে লাভ ক্ষতির অঙ্কটা ঠিক কী, কী বলছে বাংলার কৃষক সমাজ

Last Updated:

হরিয়ানা বা পঞ্জাবে যে ভাবে এই বিলটি নিয়ে সাড়া পড়েছে, পথে নেমে প্রবল বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে কৃষক সমাজ, তেমনটা কিন্তু দেখা যায়নি বাংলায়। তবে কি বাংলার কৃষকরা ওয়াকিবহাল নন বিষয়টি নিয়ে? নাকি ঘটনার আঁচ বাংলার কৃষিমহলে ততটা লাগবে না? লিখছেন অর্ক দেব।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
কলকাতা: রাজ্যে ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। ফলে মরিয়া হয়ে ফলে ইস্যু খুঁজছে সব পক্ষই। সাম্প্রতিক অতীতে আমফান ত্রাণ নিয়ে রাজ্যকে কোনঠাসা করতে ছাড়েনি বিজেপি। সেই প্রচার যখন কিছুটা ফিকে, নতুন করে অক্সিজেন পাচ্ছে তৃণমূল। সৌজন্যে নয়া কৃষিবিল। সৌজন্যে রাজ্যসভায় ডেরেক ও'ব্রায়েন, দোলা সেনদের ব্যাপক বিক্ষোভ, রাত্রিকালীন ধর্না।
advertisement

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই জানাচ্ছেন, ,সর্বাত্মক আন্দোলনের পথে যাবে তার। আজ ২২ সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হবে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী-কর্মীরা। পথে নেমে প্রতিবাদ করতে চলেছে বাম-কংগ্রেসও।

রাজনৈতিক হাতিয়ার হলেও এখনও পর্যন্ত ফার্মার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) বিল, ২০২০ এবং ফার্মার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) এগ্রিমেন্ট অব প্রাইস অ্যাশিয়োরেন্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস বিল, ২০২০ নিয়ে সব মহলেই ধোঁয়াশা রয়েছে। একদল বলছে, এটি একটি অতি জরুরি কৃষি সংস্কার। মধ্যস্বত্তভোগীকে ছাঁটাই করা যাবে এর ফলে। কৃষির আধুনিকীকরণে এটি জরুরি। অন্য দিকে, বিরোধীরা স্পষ্টই বলছে, বৃহত্তর কায়েমি স্বার্থের জন্যে দরজা খুলে দিচ্ছে সরকার। কৃষকের স্বার্থ আর সুরক্ষিত থাকছে না। রাজনীতির লোকেরা অক্সিজেন পেলেও একটা কথা মানতেই হবে, হরিয়ানা বা পঞ্জাবে যে ভাবে এই বিলটি নিয়ে সাড়া পড়েছে, পথে নেমে প্রবল বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে কৃষক সমাজ, তেমনটা কিন্তু দেখা যায়নি বাংলায়। তবে কি বাংলার কৃষকরা ওয়াকিবহাল নন বিষয়টি নিয়ে? নাকি ঘটনার আঁচ বাংলার কৃষিমহলে ততটা লাগবে না?

advertisement

সিঙ্গুরে কয়েক বিঘা জমি রয়েছে কৃষক সঞ্জীব দে কবিরাজের। তিনি বলছেন,"এখন ১০ টন মতো ধান মজুত আছে। এখন ফড়েদের অনেক কম দামে ছাড়তে হয়। কিন্তু এই কৃষিবিলের ফলে আমি মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইসের বেশি দামে নানা জায়গায় বিক্রি করতে পারব। এতে আমার লাভ বেশি হবে।"

এই আশার পাশাপাশি আশঙ্কাও রয়েছে। অনেকে বলছেন,আমার জমি, আমার শর্ত। সেখানে অন্য লোক নাক গলাবে কেন! এ তো দাদন প্রথার মতো। এক ধরনের পরাধীনতা। শান্তিপুরের ভাগচাষী শৈলেন চণ্ডীর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল কী বুঝছেন লাভবান হবেন? রীতিমতো রাগ ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। শৈলেনবাবুর কথায় "এটা চুক্তিচাষ। এই চুক্তির কোনও গ্যারেন্টি নেই। আমরা যারা অল্প জমিতে চাষ করি, ফসল কাউকে বিক্রি না করে হাটে বসেই বেচাeকেনা করি, তাদের কী হবে? ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। এটা সেই বিটি বেগুনের মতো ঘটনা। আমাদের হাতে আর কিছু থাকছে না। "

advertisement

রাজ্য সমবায় ও কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর অনির্বাণ প্রধান বলছেন, "প্রাথমিক ভাবে মাণ্ডি সংস্কৃতি না থাকার ফলে চাপ হয়তো পড়বে না। তবে সার্বিক ভাবে যদি দেখি, এখানে একটা ফাউল প্লে-র সম্ভাবনা থাকছে। এক্ষেত্রে বড় বেসরকারি সংস্থাগুলি যদি কোনও পণ্য কিনে কোল্ড স্টোরেজে রাখতে চায় তবে সরকারি আইনে আটকাবে না। এসেন্সিয়াল কোমোডিটি অ্যাক্টের দরুণ আগে অতিরিক্ত মাল গুদামজাত করা আটকাতে পারত সরকারই। এখন তা আর থাকল না"

advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকের অধিকার নিয়ে কাজ করছেন রবীন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও মেনে নিচ্ছেন, "সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা নেই বাংলার কৃষকদের।" তবে তাঁর দাবি, ভুগবে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষ। করোনার কারণে যাদের অনেকেরই হাঁড়ির হাল। রবীনবাবু বলছেন, "পশ্চিমবঙ্গের মান্ডিগুলিতে ক্রেতা-বিক্রেতা তেমন একটা যায় না। ফলে প্রত্যক্ষ ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে না কৃষকরা। তবে ক্ষতিটা অন্য রকম। রাজ্যে বহু আনাজই আসে বাইরে থেকে। নতুন বিল আইনে পরিণত হলে সেই আনাজ আসবে নতুন মোড়কে। এখন মুদিখানায় গিয়ে আমরা অবলীলায় বলতে পারি দু'টাকার শুকনো লঙ্কা দিতে। তখন আর পারব না। প্যাকিং বাবদ সরকার জিএসটিই নেবে ৬ শতাংশ। আমার যেটুকু দরকার ততটুকু কেনার অবকাশ আর থাকবে না।"

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা, এসব করতে গিয়ে মিস করেছেন প্রতিমা দর্শন? চিন্তা কীসের!
আরও দেখুন

একদিকে সিঁদুরে মেঘ, ভয়, অন্য দিকে সাক্ষাৎ প্রধানমন্ত্রীর বরাভয়। ভোটবাজারে জল মাপছে সব পক্ষই। আর বাংলার কৃষকসমাজ আপাতত পর্যবেক্ষকের আসনে বসে। সামনে সুদিন না দুর্দিন, তা জানতে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
নয়া কৃষি বিলে লাভ ক্ষতির অঙ্কটা ঠিক কী, কী বলছে বাংলার কৃষক সমাজ
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল