সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই গ্রামীণ এলাকার মানুষের মন পেতে দ্রুত গ্রামীণ এলাকার রাস্তা সংস্কারে খরচের ব্যাপারে কড়া নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। এজন্য পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে পৃথক পোর্টাল এবং অ্যাপ তৈরি করতে বলা হয়েছে। যে গ্রামীণ রাস্তার সংস্কার করা হবে সেগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে জিও ট্যাগিং করতে হবে। পোর্টালে দিতে হবে রাস্তার সংস্কার হওয়ার আগে ও পরের চিত্র। ভিডিওগ্রাফিও এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। প্রতিটি চিত্রের ওপর তারিখ ও সময় যেন উল্লেখ থাকে। পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে জেলাশাসকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জেলাগুলিকে রাস্তা সংস্কারে প্রশাসনিক অনুমতির জন্য পঞ্চায়েত দপ্তরের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। আগামী ২৭ মার্চের রাজ্যের সাড়ে আট হাজার রাস্তার টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কজ শুরুর ওয়ার্ক অর্ডার দিতে হবে। ঠিকাদারী সংস্থা ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পরই কাজ ফেলে রাখতে পারবে না। জেলাশাসকদের পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিকে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যাবে না। মহকুমা শাসক, বিডিও বা জেলাশাসকের অফিস থেকে প্রশাসনিকভাবে টেন্ডার ডাকতে হবে। জেলাপরিষদের বৈঠকে রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত পোর্টালে তুলে দিতে হবে।
advertisement
কাজ শুরুর আগে নবান্ন চায় এলাকায় ঢালাও প্রচার। এজন্য সূচনা পর্বেই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানের আযোজন করার কথা বলা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে দিতে হবে ফ্লেক্স বা হোর্ডিং। যাতে এলাকার মানুষের কাছে বার্তা যায়,রাজ্য সরকার নিজের টাকায় এই রাস্তা তৈরি করছে। বেহাল রাস্তার কাজ চলাকালীনই হয়তো পঞ্চায়েত ভোট পর্ব চলবে। প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় সরকারও প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা নির্মাণে গাইড লাইনে লোগো সহ এধরনের প্রচারের কথা বলেছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নিজস্ব লোগো রয়েছে। রাজ্য সরকার লগো বদল করাতেই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত তৈরি হয়েছিল। একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের গাইড লাইনে প্রচারের উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে ট্রেনে চেপেই বিদেশে, জানেন এই ৩ ট্রেনের কথা? নাম জানলে চমকে উঠবেন
পঞ্চায়েত দফতর জানিয়ে দিয়েছে, জেলাশাসককে বাধ্যতামূলকভাবে সংস্কারের জন্য রাস্তা নির্বাচন থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য বৈঠক এবং রাস্তা নির্মাণের কাজের ভিডিও ফটো পোর্টালে বাধ্যতামূলকভাবে তুলতে হবে। যাতে পঞ্চায়েত দপ্তর বা নবান্ন ঘরে বসে দেখে নিতে পারে কিভাবে কোন ধরনের রাস্তা সংস্কারের কাজ কি কি আলোচনা হয়েছে। কাজের গতিপ্রকৃতি। কোনও স্তরে অভিযোগ উঠলেই তৎক্ষনাত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে যাচাই করে দেখতে হবে। কোনও ক্ষেত্রেই গাফিলতি রেয়াত করা যাবে না। কাজ শেষ হওয়া মাত্রই খরচের হিসেব সহ ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে হবে। ফেলে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: সব টাকার 'মালকিন', SSC দুর্নীতিতে নজরে রহস্যময়ী হৈমন্তী! কে তিনি, বিস্ফোরক তথ্য
পঞ্চায়েত দফতরের কর্তাদের কথায়, সারা রাজ্যে ছোট,বড়, মাজারি প্রায় সাড়ে দশ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা সংস্কার হবে। সরকার আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও প্রায় তিন হাজা কোটি টাকা খরচ করে এই সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই অপচয় বন্ধ করাই লক্ষ্য। তবে গুণগত মানের ওপর বিশেষ নজর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলাশাসকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংস্কার চলাকালীন নিয়মিত আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের পরিদর্শনে যেতে হবে। তার ছবিও পোর্টালে দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহেই কাজের গতি প্রকৃতি নিয়ে জেলাশাসকদের পর্যালোচনা বৈঠক করতে হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসকদের রাস্তা ধরে ধরে নজরদারির দায়িত্ব দিতে হবে। পঞ্চায়েত দপ্তপ থেকে আধিকারিকদেরও এক্ষেত্রে জেলা ভিত্তিক নজরদারির দায়িত্ব থাকবে।