পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্য বাকিটাও ভর্তুকি দিয়ে নিখরচায় রেশনের বন্দোবস্ত করত। অন্য অনেক রাজ্য কিছুটা চাল-গম ভর্তুকি দিয়ে কম দামে রেশন দিত। কেউ আবার বাড়তি চাল-গম বা অন্য পণ্য রেশনে দিত। এ বার কেন্দ্র নিখরচায় রেশনের সম্পূর্ণ খরচ দিয়ে পুরো কৃতিত্বও চাইছে। তাই রেশন ডিলারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাজ্য সরকার বাড়তি পণ্য দিলে তার জন্য আলাদা করে বায়োমেট্রিক যাচাই করতে হবে। কেন্দ্র কী দিচ্ছে আর রাজ্য কী দিচ্ছে, তা স্পষ্ট বোঝানো যাবে।
advertisement
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনের আগেই কি শিবির বদল করবেন জন বারলা? জল্পনা এখন তুঙ্গে
এবার থেকে রেশন দোকানে খাদ্যসামগ্রী নেওয়ার সময় উপভোক্তারা ভর্তুকির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন৷ উপভোক্তাদের যে পরিমাণ খাদ্যশস্য দেওয়া হবে, তার পাশাপাশি সেই খাদ্যশস্যের পিছনে কেন্দ্র এবং রাজ্যের খরচের শেয়ার কতটা, তারও উল্লেখ থাকবে। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা আসার পরই এ-বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের খাদ্য দফতরের পক্ষ থেকে৷
২০২২ সাল থেকে কেন্দ্রের তরফে সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশিকা দিয়ে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। বেশ কিছু রাজ্য এই সিদ্ধান্ত নিলেও। পশ্চিমবঙ্গ সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে পিছিয়ে ছিল। অবশেষে তারাও এই বিষয় কার্যকর করতে চলেছে। রেশনে চাল-গম দিতে সরকারের কত টাকা খরচ হচ্ছে তা গ্রাহকদের স্লিপে উল্লেখ করা হচ্ছে। রেশন দোকানের ই-পস যন্ত্র থেকে কাগজের এই স্লিপ বেরোয়।
যেহেতু রেশন-গ্রাহকেরা চাল-গম বিনামূল্যেই পান, তাই ওই স্লিপে দামের কোনও উল্লেখ থাকত না। রাজ্য খাদ্য দফতর এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা এবং রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার আওতাভুক্ত গ্রাহকদের জন্য নতুন স্লিপ চালু হয়েছে। রেশন গ্রাহকদের প্রতি-কেজি চালের জন্য সরকারের খরচ ৩৭ টাকা ৪৬ পয়সা ধরা হয়েছে। গমের প্রতি-কেজির খরচ ধরা হয়েছে ২৭ টাকা ৮ পয়সা।
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার সমস্ত খরচ কেন্দ্রীয় সরকার এককভাবে বহন করে এ কথা সত্যি নয়। এক্ষেত্রে রাজ্যকে রেশন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কমিশন এবং পরিবহণ খরচ বহন করতে হয়। আরকেএসওয়াই ১ এবং আরকেএসওয়াই ২-এর অধীনে যে খাদ্যশস্য উপভোক্তাদের দেওয়া হয়, এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে সমস্ত খরচ বহন করতে হয়। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার সমস্ত খরচ বহন করে রাজ্য। আর সে-কারণেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় খরচের খতিয়ান যেমন স্লিপে থাকবে, একইভাবে রাজ্য সরকার উপভোক্তাদের জন্য কত টাকা খরচ করছে, তার হিসাবও দেওয়া থাকছে সেখানে।