কলকাতা : বিদ্য়াসাগর না থাকলে হয়তো বিপদে পড়ে যেতেন রবীন্দ্রনাথ। শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে আবেগের সুরে এই মন্তব্য় করেন রাজ্য়ের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়। তাঁর দাবি, প্রচারের কারণেই পরিচিতি পান অনেকে। আবার প্রচার না থাকার কারণে অনেকে প্রাপ্য় পরিচিতি বা সম্মান পান না। পঞ্চায়েতমন্ত্রীর অভিযোগ, বাংলা ব্যাকরণের ভিত তৈরি করেও অবহেলিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর জন্মদিবস, মৃত্য়ুদিবস পালন হয় ঠিকই, কিন্তু সেভাবে হয় না। সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়ের দাবি, আরও অনেক বেশি গুরুত্ব পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রাপ্য়। প্রসঙ্গত, চলতি বছরই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে। এই সময়ে দাঁড়িয়ে রাজ্য়ের মন্ত্রীর এই মন্তব্য়কে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন অনেকেই। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গেও এবিষয়ে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়।
advertisement
বাংলা সাহিত্য় নিয়ে আলোচনার সময়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্য়কে বিশ্বের আঙিনায় নিয়ে যান। কিন্তু যে ভাষা নিয়ে তিনি কাজ করেছেন, সেই ভাষার ভিত মজবুত করেছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাই তাঁর দাবি, বিদ্য়াসাগর না থাকলে হয়তো সাহিত্য় রচনায় বিপাকে পড়তেন রবীন্দ্রনাথ।
ভারতে বা বাংলায় অনেক মণীষী, কবি,সাহিত্য়িক জন্ম নিয়েছেন। তাঁদের কেউ প্রচার,পরিচিতি পেয়েছেন। আবার কেউ থেকে গিয়েছেন অবহেলিত। ইতিহাসের পাতার আড়ালে তাঁরা থেকে গিয়েছেন পাঠ্য়পুস্তকেই। তাঁদের হয়েই এদিন সরব হয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি বিশালাকার। কিন্তু তিনি প্রচারও পেয়েছিলেন ব্যাপক পরিমাণে যার ধারাবাহিকতা এখনও চলে আসছে। বিভূতিভূষণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,দ্বিজেন্দ্রলাল রায়,নবীন সেন, মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার, ভরতচন্দ্র রায়,মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, মাইকেল মধুসূদন দত্তরা এতটা প্রচার পাননি। সুব্রতবাবু আজকে সেই বক্তব্য তুলে ধরেন। বিভিন্ন বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের নিয়ে একটা স্তরে গবেষণা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের নিয়ে প্রচার সেভাবে হয়নি।
২০১১ সালে রাজ্য়ে পালাবদলের পর সরকারের তরফে বিভিন্ন মণীষী, কবি-সাহিত্য়িক, গায়কদের জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করা হয়। তবে সরকারের পঞ্চায়েতমন্ত্রীর ইঙ্গিত, যা হচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়। আরও অনেক বেশি সম্মান তাঁদের প্রাপ্য়। তাঁদের কাজকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে ৷