চলতি বছরের শুরুতেই বিশ্বজিৎকে কার্ড পাঠিয়েছিলেন নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ফেব্রুয়ারি মাসে, ভোটের দামামা তখন বেজে গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি দেখা গিয়েছিল বিশ্বজিতের। সোজা পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন বিশ্বজিৎ। এই হৃদ্যতা নিয়ে কথা চালাচালি তখনই শুরু হয়েছিল। জল্পনা ছিল বিশ্বজিতের তৃণমূলে ফেরার পথে।
সে সময়ে জল্পনায় ঘি ঢেলেছিলেন বিশ্বজিৎ নিজেই। এই কয়েকমাসে তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তা প্রায় শূন্যে এসে ঠেকেছিল। ধূমধাম করে বিজেপি প্রশিক্ষণ শিবির করলেও যাননি বিশ্বজিৎ। আবার অমিত শাহ তাঁর এলাকায় সভা করতে গেলেও মঞ্চে দেখা যায়নি বিশ্বজিৎকে। এই তো দিন কয়েক আগের ঘটনা, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে যখন বিজেপি পুরসভা অভিযানে গেল, তখনও বিশ্বজিতের দেখা মেলেনি। বরং তৃণমূল মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের সঙ্গে খোশগল্পে মেতে ছিলেন তিনি ঠিক একই সময়ে। দিলীপ ঘোষ জেলার সাংগঠনিক বৈঠক সেরেছেন, এড়িয়ে গিয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিশ্বজিৎ। এইসব দেখেই রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল, বিশ্বজিৎ পা বাড়িয়েই রেখেছেন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য।
advertisement
পর্যবেক্ষকদের মত, বিজেপিতে গেলেও বিশ্বজিতের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের বীজ মাটির অনেক গভীরে প্রোথিত। বিশ্বজিৎ রাজনৈতিক মত ও পথের দিক থেকে মুকুল ঘরানার। দল বদলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কখনও প্রকাশ্যে কু-মন্তব্য করেননি তিনি। ঘুরিয়ে বলা যায়, নরমপন্থার পথ বেছে নিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সস্নেহ প্রশ্রয়ও তাঁর প্রতি অটুট ছিল।
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সদস্য ছিলেন বিশ্বজিৎ। ২০১১ এবং ২০১৬ বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে জেতেন বিশ্বজিৎ। গত বছর লোকসভা ভোটের আগে দিল্লিতে গিয়ে বিশ্বজিৎ বিজেপিতে যোগদান করেন। জল অনেক অনেক দূর গড়িয়েছে। কিন্তু কোনও পক্ষই সম্পর্ক তিক্ত হতে দেয়নি। বরং শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বিশ্বজিতের দূরত্ব বজায় থেকেছে প্রথম থেকে। সেই দূরত্ব থেকে কি চিরবিচ্ছেদ রচিত হতে চলেছে? উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুক্ষণেই।