হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার তলব করে অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে। সেই মতো, বৃহস্পতিবার সকালে বীরভূমের বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ গাড়ি চেপে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন সুকন্যা।
আরও পড়ুন: টার্গেট পঞ্চায়েত ভোট? চা বাগানের সমাবেশে আবার অভিষেক! প্রস্তুতি শুরু জেলা তৃণমূলের
সুকন্যা ছাড়াও কলকাতার এসেছেন অনুব্রতের ভাইপো সাত্যকি-সহ মোট ছ’জন। অভিযোগ, শুধুই সুকন্যা নন, অনুব্রতের ভাই সুমিত-সহ মোট ৬ জন টেট না দিয়েই চাকরি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার ছ’জনকেই টেট পরীক্ষায় পাশ করার শংসাপত্র নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
advertisement
গরুপাচার মামলায় অনুব্রতের গ্রেফতারের পর কলকাতা হাই কোর্টে তাঁর কন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে, টেট না দিয়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন সুকন্যা। তাঁর নামের ফেসবুক প্রোফাইলও বলছে, তিনি একই সঙ্গে দু'টি চাকরি করেন। একটি সরকারি, অন্যটি বেসরকারি। হাইকোর্টে বুধবার আইনজীবী ফিরদৌস শামিম অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিয়ে সুকন্যার চাকরির বিষয়টি আদালতকে জানান। সেটা শুনেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বেলা ৩টের মধ্যে সুকন্যাকে কলকাতা হাই কোর্টে ডেকে পাঠান। বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে কলকাতায় এসেছেন সুকন্যা। বুধবার বিকেলে কলকাতা হাই কোর্টে সুকন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে যে, টেট পরীক্ষা না দিয়েই তিনি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন। এ-ও অভিযোগ যে, সুকন্যা স্কুলে না গিয়েই বেতন পান বাড়িতে বসে। সুকন্যার সই নেওয়ার জন্য স্কুলের রেজিস্টার খাতা অনুব্রতর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হত বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের দাবি, টেট পরীক্ষা না দিয়েই সুকন্যা প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছেন। তাঁর নিয়োগ হয় বোলপুর ওয়েস্ট সার্কেলের কালিকাপুর প্রাইমারি স্কুলে। তাঁর আরও অভিযোগ, শুধু সুকন্যা নন, অনুব্রতের অনেক ঘনিষ্ঠ এবং আত্মীয়ও চাকরি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাকাউন্ট লেনদেনেও শতাংশের খেলা, ধরা পড়ে গেল অনুব্রতর কৌশল-কেরামতি!
গরুপাচার কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন। তাঁর গ্রেফতার হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার নতুন করে সিবিআই আধিকারিকরা হানা দেন বোলপুরে। বোলপুরে একাধিক জায়গায় রেড করার পাশাপাশি ফের একবার অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছে যান আধিকারিকরা। তবে সেখানে মাত্র ১০ মিনিট পরই বেরিয়ে আসতে দেখা যায় অফিসারদের।
অন্যদিকে, কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের চাকরি-বিতর্কে এই প্রথম বার মুখ খুললেন অনুব্রত মণ্ডল। আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে অনুব্রতকে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে যাচ্ছিল সিবিআই। সেখানে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে অনুব্রত বলেন, '' যা বোঝার আদালত বুঝবে। তলব করেনি মেয়েকে। নথি জমা দিতে বলেছে।' এখানেই শেষ নয়, টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন সুকন্যা। বৃহস্পতিবার এমনই দাবি করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। তিনি বললেন, আমার মেয়ে ভাল আছে। আমার মেয়ের পাশ করা আছে। সার্টিফিকেট আছে। চিন্তার কারণ নেই।''