এদিন শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতকে জানান, কলকাতা হাইকোর্ট সন্দেশখালির ১৪৪ ধারা বাতিল করেছিল। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বিকাল ৩:৩০ নাগাদ ১৪৪ ধারা খারিজ করেন। সেইদিনই ফের নতুন করে ১৪৪ ধারা লাগু করে প্রশাসন। নতুন কোনও কারণ পুলিশের তরফ থেকে দেখানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, বিজেপি বসিরহাটের পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করেছে, গন্ডগোল হয়েছে, পুলিশ কর্মীরা আহত হয়েছে, তাই ১৪৪ ধারা জারি করা হল। আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া হয়নি বলে সওয়াল করেন শুভেন্দুর আইনজীবী৷
advertisement
তাঁর অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে ৩০ কিমি আগেই আটকে দেয় পুলিশ। তাছাড়া, যে বা যাঁরা ধর্ষণের অভিযোগ করছেন, গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁদের উপরে হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাজ্যের তরফে অবশ্য Central Intelligence Bureau র একটি রিপোর্ট পেশ করে পাল্টা দাবি করা হয়, ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ শুভেন্দু অধিকারী ওই এলাকার বাসিন্দা নয়। আগে যে মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৪৪ ধারা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন সেটা গ্রামবাসীদের করা মামলা ছিল। তারা নিজেদের অসুবিধার কারণে মামলা দায়ের করতে পারেন।
কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী ওই এলাকা থেকে অনেক দূরে থাকেন। আজকের এই মামলা গ্রামবাসীদের দায়ের করা নয়। শুভেন্দু অধিকারী ওখানে গেলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এই আশঙ্কা Central Intelligence Bureau র রিপোর্টে রয়েছে বলে জানায় রাজ্য।
যদিও রাজ্যের যুক্তিতে বিশেষ সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি৷ তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী ভারতবর্ষের যে কোনও নাগরিক যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন। রাজ্য বলতে পারে না যে, কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি সন্দেশখালি যাবেন না। প্রশাসন অবশ্যই বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে। কিন্ত যাবেন না এটা বলতে পারে না। সেই বিধিনিষেধ আদৌ গ্রহণযোগ্য কি না, বা সেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে সেটা আদালত খতিয়ে দেখবে।’’
আরও পড়ুন: শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীকে লালবাজারে ডেকে পাঠাল পুলিশ! আদালতে দাঁড়িয়ে হেনস্থার অভিযোগ
বিচারপতি বলেন, ‘‘কে প্রভাবিত আর কে প্রভাবিত নয় সেটা কে ঠিক করবে ? কালকে আমার যদি মনে হয় যে সন্দেশখালির ঘটনায় আমি প্রভাবিত হয়েছি এবং আমি ওখানে যেতে চাই, তারপর যদি আমাকে আটকানো হয় তাহলে আমি নিজের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে সেই অভিযোগে মামলা করতেই পারি।’’
রাজ্য আদালতকে জানায়, ‘‘আগে ১৯ টি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। এখন ১৫ টি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি আছে। ফলে আমরা ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনছি।’’ এরপরেই শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর বলেন, ‘‘তাহলে যেখানে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে সেই এলাকায় আমাকে যেতে দেওয়া হোক।’’