একসঙ্গে মিলেমিশে বড় হয়ে ওঠা ওদের। কিন্তু একরত্তি শিশুগুলো ভাইফোঁটা কিংবা রাখিবন্ধন কী, সেটাই জানতো না। দমদম স্টেশনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে ছিটিয়ে, এলোমেলো ঘোরাফেরা করে মিষ্টি, বুলিরা।
অফিস যাতায়াতের পথে বরানগরের সুমন, সুরজিৎ, ঋষিরা ওদের রোজ দেখে। কখনও সখনও টুকটাক কথাও বলে। এমনি কথা বলতে বলতে সুমন একদিন ওদের একজনকে জিজ্ঞেস করে, 'ভাইকে ফোঁটা দিস?' বছর পাঁচেকের মিষ্টি চোখ বড় বড় করে জানতে চায়, 'সেটা আবার কী?' জীবনে প্রথম বার ভাইফোঁটার নাম শুনল যে ওরা!
advertisement
একসঙ্গে এতোগুলো শিশুর বেড়ে ওঠা। সম্পর্কে ভাইবোনের আত্মীয়তাও রয়েছে কারও কারও মধ্যে। কিন্তু ভাইফোঁটা বা রাখিবন্ধন ওদের কাছে অজানা, অচেনা। দু'বেলা পেট ভরে ভাত জোটে না যাদের, তাদের কাছে ভাইফোঁটার ভাবনা তো বিলাসিতাই।
বরানগরের হাসিখুশি ক্লাবের সুমন পাড়ায় ফিরে বন্ধুদের গল্পর ছলে পুরো ঘটনাটা বলতেই ঋষি, ইন্দ্রনীল, সুরজিৎ, দীপাঞ্জনরা ঠিক করে ফেলে দমদমের ওই ফুটফুটে শিশুগুলোর জন্য এবার কিছু একটা করবে ভাইফোঁটায়! যেমন ভাবা, তেমন কাজ। যোগাযোগ করা হয় অভিনেতা সোহমের সঙ্গে। সুমনদের ভাবনা শুনে এগিয়ে আসেন টলিউডের নায়ক সোহম চক্রবর্তী।
ব্যাস! আর কী! সোমবার সকালে মিষ্টি আর কিছু উপহার নিয়ে বরানগরের হাসিখুশি ক্লাবের ওরা পৌঁছে যায় দমদম স্টেশনে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে প্রথমে তো বোঝাতেই বেলা শেষ। তারপর পঞ্চাশ জনকে একসঙ্গে করে চলল ফোঁটা দেওয়ার পালা।
অতিমারির খারাপ সময়েও দমদম স্টেশন সাক্ষী থাকল মন ছুঁয়ে যাওয়া এক অভিনব ভাইফোঁটার। রাজু, বুলিরা জীবনে প্রথম বার জানল ভাই-বোনের সম্পর্কের মিষ্টি এক উদযাপনকে।
PARADIP GHOSH