রাজ্যের বর্তমান দুই স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী ও ডাঃ দেবাশিস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘সরকারি হাসপাতালে সব প্রসূতির বাধ্যতামূলকভাবে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও একই অনুরোধ করা হবে।’ এই পরিকল্পনারই অঙ্গ হিসেবে গত ৩ দিন ধরে সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে কোরিওনিক ভিলাস স্যাম্পলিং (সিভিএস) কর্মশালা। এই সিভিএস পদ্ধতির মাধ্যমেই গর্ভস্থ ভ্রূণের শরীর থেকে কোষ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শেখানো হয় চিকিৎসকদের থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার জন্য।
advertisement
আরও পড়ুন - দিল্লির আগুনের ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, আহতদের ৫০ হাজার টাকা, ঘোষণা মোদির
বর্তমানে ভারতে প্রতি ঘণ্টায় একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হয়। ১০ কোটি জনসংখ্যার বাংলায় ১০-১৫ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। বর্তমানে রাজ্যে রক্তের এই অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজারের কাছাকাছি। ১৮ হাজার আক্রান্তকে রক্ত পাল্টাতে হয় নিয়মিত। ২৬ হাজারের সেই প্রয়োজন পড়ে না। তবে চিকিৎসার মধ্যে থাকাটা তাদের অত্যন্ত জরুরি। না হলে তিরিশের কোটাও পার করেন না অনেক রোগী।
আরও পড়ুন - রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, এখনও পর্যন্ত মৃত ২৭, বহুতলে আটকে আরও বহু
প্রত্যেক প্রসূতির থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা জরুরি কেন? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এইচপিএলসি বা থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষায় যদি কোনও প্রসূতির এই রোগ ধরা পড়ে (বাহক হন), দ্রুত তাঁর স্বামীরও এই পরীক্ষা করাতে হবে। দু’জনেই বাহক বা কেরিয়ার হলে, গর্ভস্থ ভ্রূণের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। কারণ, এক্ষেত্রে তার থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে থাকে। পরীক্ষায় সেই আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হলে সেক্ষেত্রে দম্পতির কাউন্সেলিং করিয়ে গর্ভপাত করতে অনুরোধ করা হবে। বাংলার থ্যালাসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির নোডাল অফিসার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ তুফানকান্তি দলুই বলেন, যাঁর বাড়িতে থ্যালাসেমিয়া রোগী আছে, তিনিই বোঝেন সন্তান প্রতিপালনের সঙ্গে কতটা কষ্ট, যন্ত্রণা ও প্রতি মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ জড়িয়ে। ভবিষ্যতে রাজ্যে যাতে নতুন করে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে কেউ না জন্মায়, সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলা চিকিৎসক রামেন্দু হোম চৌধুরী বলেন,' এই সিদ্ধান্ত কালজয়ী। রাজ্য সরকারকে অনেক অভিনন্দন। বারবার করে দীর্ঘদিন ধরে এই আবেদন জানিয়ে আসছিলাম। তবে বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীর উভয়রেই যদি থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করা হয় তবে আরও ভাল হবে।'
Avijit Chanda