#কলকাতা: ছিল আলোচনা বাজেট নিয়ে। বললেন তিনি সোয়াবিন নিয়ে। গোটা বিধানসভার লবি থেকে এমএলএ হস্টেল, সর্বত্রই চলছে বিধানসভার বাজেট আলোচনায় সুস্বাদু সোয়াবিনের ঢুকে পড়ার প্রসঙ্গ। বিরোধী দলের বিধায়কের সোয়াবিন প্রেম নিয়ে টিপ্পনী কাটতে ছাড়ছেন না শাসক দলের বিধায়করা। তাঁদের সহাস্য জবাব, এসেছিলেন গরুর রচনা মুখস্থ করে, পরীক্ষায় পড়ে গিয়েছে কুমিরের রচনা।
advertisement
আসল ঘটনাটা হল বৃহস্পতিবার ছিল বিধানসভায় বাজেট নিয়ে আলোচনার দিন। পদ্মফুল শিবিরের তরফে অশোক লাহিড়ী, শ্রীরুপা মিত্র চৌধুরী, অগ্নিমিত্রা পাল, শঙ্কর ঘোষের মতো বক্তাদের পাশাপাশি নাম ছিল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর। রায়গঞ্জের বিধায়কের বাজেট নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখার কথা ছিল। কিন্তু সেই বক্তব্য রাখতে গিয়েই তিনি সোয়াবিন নিয়ে বলতে শুরু করে দিলেন। খামোখা সোয়াবিন নিয়ে আলোচনা কেন?
কৃষ্ণ কল্যাণী হলেন রায়গঞ্জের ব্যবসায়ী। চেম্বার অফ কমার্সের প্রতিনিধি হিসাবেও তিনি ছিলেন। সে কারণে রায়গঞ্জে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি হাজির হয়েছিলেন সোয়াবিন চাষের জন্যে। তিনি তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে নজর কেড়ে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও সেই বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব রাজীবা সিনহা জানিয়েছিলেন রাজ্যে, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় চেষ্টা করেও সোয়াবিন চাষ সফল হয়নি। যদিও কৃষ্ণ কল্যাণী জানিয়েছিলেন, উত্তরবঙ্গে সফল হবে সোয়াবিন চাষ। এর পরেই মাঠে নেমে পড়েন রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী। রায়গঞ্জে তাঁর ব্যবসা আছে। আছে কারখানা। সেই কারখানার জমিতেই তিনি শুরু করে দেন সোয়াবিন চাষ। বেগুসরাই থেকে দু'জন কৃষককে নিয়ে এসে চাষ করান। আর সাফল্য পান। তাঁর সোয়াবিন চাষ দেখতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞানীরা সেখানে যান। সেই রিপোর্ট যায় নবান্নে।
এর পরে অবশ্য বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জে লড়াই শুরু করেন। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে জিতে বিধায়ক হন। বিধায়ক হয়ে বাজেট অধিবেশনে বলার সুযোগ পেয়ে যান। সেখানেই তিনি সোয়াবিনকে হাতিয়ার করে কথা বলেন। বিধায়ক জানিয়েছেন, "সোয়াবিন একটা পুষ্টিকর খাবার। সবাই এর স্বাদ পেতে পারেন। সোয়াবিন দিয়ে তেল, সস সব বানানো যায়। এর জন্যে অর্গানিক ফার্মিং করা উচিত। রাজ্য সরকারের উচিত সোয়াবিন চাষে আরও উৎসাহ দেওয়া।" তাই বাজেট নিয়ে বলতে গিয়ে সোয়াবিন চাষ নিয়ে মনোযোগী হয়ে ওঠেন কৃষ্ণ কল্যাণী।