বৃহস্পতিবার বিচারপতি বলেন, ‘আদালত আশা করে এই ধরনের একটা মামলার সময় তদন্তকারী দলের দায়িত্বশীল কোনও আধিকারিক আদালতে উপস্থিত থাকবেন। তদন্তকারী দলে কারা কারা আছেন? DIG-CID-কে তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলাম। সেই নামগুলো কোথায়?’ এর উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী জানান, রিপোর্টে পদমর্যাদা লেখা রয়েছে। পাল্টা বিচারপতির প্রশ্ন, ‘শুধু পদমর্যাদা থাকলে কী করে বুঝব? নাম কোথা থেকে পাব? নির্দিষ্ট কিছু অফিসারের উপর দ্বায়িত্ব থাকবে তো?’ তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চলছে, সেটা মাথায় রাখতে হবে তো। দলের সদস্যদের পরিবর্তন করতেই পারেন, কিন্তু ইচ্ছামতো আধিকারিক পরিবর্তন করলে হবে না। যদি তদন্তকারী দল গঠন করা হয় তাহলে সেটা নাম অনুযায়ী হবে? নাকি পদমর্যাদা অনুযায়ী?’
advertisement
আরও পড়ুন: ‘চাপে আছি বাবা এসো, মা এসো’! শেষ ফোনে বলেছিল যাদবপুরের স্বপ্নদীপ
আদালতে রাজ্যের যুক্তি, ‘সাত জনের দল তৈরি করা হয়েছিল। আজকের মধ্যে সব নাম আদালতে জমা দিচ্ছি।’। এর পর ফের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য, ‘আমি CID-র উপর আস্থা রেখেছিলাম। চারজন আধিকারিক আজকে আদালতে এসেছেন, বাকি তিনজন কোথায়? শুধু অনিমেষ তেওয়ারি আর তার বাবার বিষয়ে তদন্ত করলে হবে না, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র খুঁজতে হবে। আমি এখনও বিশ্বাস করি রাজ্য কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে না, আপনারা কি আমাকে ভুল প্রমাণ করতে চান? আপনারা কীভাবে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবেন সেটা নিশ্চয় আমাকে বলে দিতে হবে না।’
আরও পড়ুন: বেহালায় শিশুমৃত্যু ঘিরে অশান্তিতে ৩৫ জন জড়িত, অথচ দীর্ঘ সময় রাস্তায় পড়েছিল সৌরনীলের দেহ!
আদালতের সওয়াল-জবাবে এদিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ দাবি করে, ‘আমরা প্রচুর অনিয়মের সন্ধান পেয়েছি।’ বিচারপতি বসু বলেন, ‘ভুয়ো নথির ভিত্তিতে বেশ কিছু শিক্ষক বেতন পাচ্ছে, কেন এরকম হবে? স্কুল সার্ভিস কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কারও কাছে কোনও নথি নেই! কাজ করছে? এই ধরনের সুপরিকল্পিত দুর্নীতি একজনের দ্বারা সম্ভব নয়, নিশ্চয়ই এর পিছনে অন্য কেউ আছে। খুঁজে বের করুন। CID-কে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়েছে, আর দেওয়া হবে না।’
আদালতে ক্ষুদ্ধ বিচারপতির তদন্তকারী অফিসারকে প্রশ্ন, ‘মাত্র দুজন ডিআই আর বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করে কী হবে? যদি CID কাজ না করে তাহলে তাদের এর ফল ভুগতে হবে। CID-র কাজে আমি সন্তুষ্ট নই। আপনি কি শুধু মুর্শিদাবাদেই ঘুরবেন নাকি বাইরে যাবেন? আপনি কি অপেক্ষা করছেন কে কেউ এসে আপনাকে নথি হাতে দিয়ে যাবেন? সাত দিনের মধ্যে লক্ষণীয় পদক্ষেপ করুন। CID কে সক্রিয় করুন। আমি শুনেছি অনিমেষ তেওয়ারি ভোট দিতে এসেছিল, তারপর আপনারা গ্রেফতার করেছেন।’ রাজ্য যদিও পাল্টা দাবি করে, ‘না, এরকম ঘটনা ঘটেনি’। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ অগাস্ট।
অর্ণব হাজরা