এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে একটানা সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি কল্যাণময়কে। তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট না হওয়ায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: মাত্র কুড়ি বছরেই কাঁধে ৫ জনের সংসারের ভার, মদ্য়পদের গাড়ির চাকায় শেষ হল অঞ্জলির স্বপ্
advertisement
সিবিআই অভিযোগ করে, ২০১০ সাল থেকে টানা প্রায় ১০ বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন কল্যাণময়। সেই সময়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এর আগে বিশেষ সিবিআই আদালত ও হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চেও জামিনের আবেদন করেছিলেন কল্যাণময়। তা খারিজ করে করে দেয় আদালত।
বুধবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে কল্যাণময়ের জামিন মামলার শুনানি চলাকালীন কল্যাণময়ের আইনজীবী শেখর বসু আদালতে সওয়ালে করেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে নিয়োগ করানোর অভিযোগ এনেছে সিবিআই, চার্জশিটও দাখিল হয়েছে। গ্রেফতারির পর থেকে ১১৩ দিন জেলে রয়েছেন কল্যাণময়। এবার অন্তত তাঁর জামিন মঞ্জুর করুক আদালত। তাঁর দাবি, তিনি যাঁদের নিয়োগ করেছেন তা শান্তিপ্রসাদ সিনহার সুপারিশ পত্র মেনেই করেছেন।
এরপরেই সিবিআইয়ের আইনজীবী অরুণ মাইতির সওয়াল, "অনুসন্ধানের সময় কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে বেনিয়ম করার প্রমাণ মিলেছে। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।" সিবিআইয়ের দাবি, শান্তিপ্রসাদ সিনহার সঙ্গে চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্য়ায়। শান্তিপ্রসাদ সিনহার কাছ থেকে সুপারিশপত্র নিয়ে নিজেই সরাসরি নিয়োগপত্র দিতেন কল্যাণময়। প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।
সব শুনে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির মন্তব্য, "ডিভিশন বেঞ্চ এই দুর্নীতির কার্যপ্রণালী এবং এই দুর্নীতিতে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ভূমিকা জানতে চায়। কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছে? কতজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে? চাকরি নিশ্চয়ই ভালবাসার কারণে দেওয়া হয়নি?" প্রশ্ন করেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: দিল্লি কাণ্ডে নয়া মোড়, তরুণীর সঙ্গে ছিলেন এক বান্ধবীও! দুর্ঘটনার পরই উধাও
এরপরেই সিবিআই-কে বিচারপতির পরামর্শ, "টাকার লেনদেন আছে কি না, খুঁজে দেখুন। কতদিন জেলবন্দি করে রাখতে পারবেন? গোটা বিচারপ্রক্রিয়া কি ঠিক সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারবেন? তদন্ত চালিয়ে যান।"
এরপরে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করা হচ্ছে। গ্রুপ C -তে বেনিয়মে ৩৮১ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আগামী বৃহস্পতিবার ফের কল্যাণময়ের জামিন মামলার শুনানি।