বিক্ষোভ, পথ অবরোধের জেরে সোমবার দিনভর সরগরম ছিল নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস রোড। ফি কমানোর দাবিতে শহরের একাধিক স্কুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকরা। এবার সেই তালিকায় জুড়ে গেল কলকাতার ডি'পল স্কুলও। লকডাউনের কারণে বর্তমান সময়ে অনেক অভিভাবকেরই অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। সেই জায়গা থেকেই অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন যাতে লকডাউন সময়কালীন স্কুল ফি কমানো হয়। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিবাবকদের সেই আবেদনে নারাজ। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে অভিভাবকদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও অবস্থাতেই ফি কমানো সম্ভব নয়। নির্ধারিত ফি পুরোটাই দিতে হবে'। আর এরপরই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে স্কুল চত্বরে।
advertisement
অভিভাবকদের অভিযোগ, লকডাউনের সময় এসি'র খরচ, স্মার্ট বোর্ডের খরচ, লাইব্রেরীর খরচ, ফুল বিল্ডিং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ সহ একাধিক আনুষাঙ্গিক খরচের হিসাব দিলেও তা বর্তমানে অপ্রয়োজন। আমরা বলেছিলাম, যেহেতু অনলাইনে ক্লাস চলছে তাই শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক। তাতে রাজি হয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমরা এও বলেছিলাম, বার্ষিক যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তার ৫০ শতাংশ নেওয়া হোক। এতেও রাজি হয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সহানুভূতি তো দূর অস্ত, রীতিমত আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে ফি জমা দিতে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ অভিভাবকদের। অভিভাবকদের তরফে সৌরভ প্রধান, সুপর্ণা মালাকাররা বলেন, অভিবাবকদের এক প্রতিনিধি দল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও তারা কোনও অবস্থাতেই ফি কমানোর বিষয়ে আগ্রহী নয়। বিক্ষোভ পথ অবরোধ চলাকালীন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছোন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ কর্তা। বৈঠক করেন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। শেষমেষ পুলিশের তরফে অবিভাবকদের আগামী ২৯ জুন সকাল ১১ টায় অভিভাবকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসার কথা জানালে আন্দোলন থেকে সরে আসেন অভিভাবকরা। অভিভাবকদের একাংশের ক্ষোভ পুলিশের বিরুদ্ধেও। বিক্ষোভ চলাকালীন অভিবাবকদের এক পুলিশ কর্মী ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলেন, 'ইংরেজি মাধ্যম এই স্কুলে পড়ানোর খরচ না চালাতে পারলে আপনারা সন্তানদের স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি করুন। খরচ বেঁচে যাবে'। পুলিসকর্মীর এই বক্তব্যের জেরে বেজায় চটে যান অভিভাবকরা। পুলিশের অমানবিক ব্যবহারের প্রতিবাদে গর্জেও ওঠেন অভিভাবক মহল। সোমবার আন্দোলন থেকে সরে আসাকে অভিভাবকরা আন্দোলন প্রত্যাহার বলে মানতে নারাজ। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, আমরা আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখছি ।আগামী 29 জুন যদি আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে কোনও রকম সমাধানসূত্র না বের হয় তাহলে 'নো ফি নো স্কুল' স্লোগানকে সামনে রেখে ফের আন্দোলনের রাস্তাতেই নামবো। হুঁশিয়ারি অভিভাবকদের।
VENKATESWAR LAHIRI