ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এ দিন মধ্য কলকাতার তালতলা এলাকায় খোঁজ মিলল শরৎ পাত্রের৷ তালতলার ডাক্তার লেনের একটি প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবের হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি৷ শরৎ পাত্র অবশ্য নির্লিপ্ত ভাবেই স্বীকার করেছেন, ভ্যাকসিন দেওয়া সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই তাঁর৷ শরৎবাবুর দাবি, প্রথম দিন দেবাঞ্জনের বাবা-মাকেও তিনিই টিকা দিয়েছিলেন৷ আর অতবড় মাপের আইএএস অফিসারকে দেখে তাঁরও সাহস বেড়ে গিয়েছিল৷ শরৎবাবুর দাবি, তখনও তিনি জানতেন না যে দেবাঞ্জন ভুয়ো আইএএস অফিসার৷ তিনি বলেন, 'আমাকে বলেছিল ইঞ্জেকশন দিতে হবে৷ ভ্যাকসিনের কথা কিছু জানতাম না৷' কিন্তু ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে জানার পরেও তিনি কেন কাজ চালিয়ে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে৷
advertisement
শুধু তাই নয়, এ দিন নিজের ব্যাগ থেকেই দেবাঞ্জন দেবের ক্যাম্পে ব্যবহৃত ভুয়ো ভ্যাকসিনের একটি ভায়াল বা শিশিও বের করে দেখান শরৎ পাত্র৷ এই শিশিটির উপরে করোনা টিকার লেবেল লাগানো থাকলেও তাতে কোনও ব্যাচ নম্বর, এক্সপায়ারি ডেট কিছুরই উল্লেখ ছিল না৷ হাত দিয়ে টানলেই সেই কাগজ উঠে এসে নীচে নীচের অ্যামিকাসিন অ্যান্টিবায়োটিকের লেবেল বেরিয়ে আসছে৷ তাতে অবশ্য এক্সপায়ারি ডেট রয়েছে৷ শরৎ পাত্র স্বীকার করেছেন, দেবাঞ্জনের ক্যাম্পে কাজ করতে গিয়ে এই বিষয়টি তাঁরও নজরে পড়েছে৷ এতদিন এই পেশায় থাকা সত্ত্বেও তাঁর কেন এ বিষয়ে সন্দেহ হল না, সেই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি শরৎ পাত্র৷ তিনি শুধু বলেন, 'আমি দেখলাম ও নিজে ভ্যাকসিন নিল, নিজের মা- বাবাকে ওই ভ্যাকসিন দিল৷ সাংসদ থেকে শুরু করে পুরসভার বড় বড় অফিসার সবাই এই ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, তাই আর সন্দেহ করিনি৷' অভিনেত্রী, সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে 'ভ্যাকসিন' দেওয়ার পর শরতের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়৷
শরৎ জানিয়েছেন, দেবাঞ্জন দেবের পরিচিত শান্তনু মান্নার সূত্রেই তাঁর সঙ্গে ওই ভুয়ো আইএএস অফিসারের পরিচয় হয়৷ প্রথম দিন চার জনকে 'ভ্যাকসিন' দিয়েই ১৪০০ টাকা পান তিনি৷ এর পর থেকেই দেবাঞ্জনের হয়ে কাজ করছিলেন শরৎ৷
আদতে ওড়িশার বাসিন্দা শরৎ অষ্টম শ্রেণি পাশ৷ ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে এখনও তাঁকে ডেকে জেরা করেনি পুলিশ৷ আজ, শনিবারই তাঁর ওড়িশা ফেরার ট্রেনের টিকিট কাটা রয়েছে৷ শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ কেন ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে শরতের সঙ্গে কথা বলল না, সেটাই প্রশ্ন৷
Shanku Santra
