বিধানসভায় কোনও কমিটিতে জায়গা না পাওয়া শুধুই অধিকারের প্রশ্নে বৈষম্যই নয়। একই সঙ্গে নওশাদের আর্থিক ক্ষতিও বটে। এই মুহূর্তে বিধায়করা মাইনে হিসেবে পান ২১ হাজার ৮৭০ টাকা আজকের বাজারে যা অত্যন্ত সাধারণ বেতন বলেই বিবেচ্য। কিন্তু তাঁদের আয়ের মূল রাস্তাটা থাকে কমিটি মিটিং। বেশিরভাগ বিধায়ককে একাধিক কমিটির সদস্য হন। মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করলে তাঁরা ২০০০ টাকা ভাতা হিসেবে পান। এ ভাবে রোজগার হয় গড়ে ৬০ হাজার টাকা। অর্থাৎ একজন বিধায়ক ৮১ হাজার ৮৭০ টাকা সোজা পথে আয় করতে পারেন। নওশাদের ক্ষেত্রে কোনও কমিটিতে জায়গা না হওয়াটা তাঁকে আর্থিকভাবেও অন্য বিধায়কদের থেকে পিছিয়ে দেবে ,বলছে তথ্যই।
advertisement
নওশাদ বলছেন, কমিটিতে থাকাটা আমার হকের, প্রাপ্য। এখন সরকারপক্ষ বা বিরোধীপক্ষ কেউই আমার সঙ্গে তেমন ভাবে যোগাযোগ করেনি এই নিয়ে। এই নিয়ে কারও কাছে আবদারও করতে চান না অভিমানী আইএসএফ নেতা।
উল্লেখ্য বিধানসভায় মোট ৪১ টি কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে ২৬ টি স্ট্যান্ডিং কমিটি। ১৫ টি অ্যাসেম্বলি অ্যাসেম্বলি কমিটি। এই ১৫ টি কমিটির মধ্যে পিএসই, এস্টিমেট, প্রিভিলেজ এবং পাবলিক একাউন্ট- এই চারটি কমিটিতে সদস্য বাছাই হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনও কমিটিতে নাম বিবেচনায় আসেনি নওশাদের।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এই ঘটনা বিধানসভার স্পিরিটের পরিপন্থী। এতে সাংবিধানিক কাঠামোই ক্ষুন্ন হচ্ছে। নওশাদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচারণের একটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, আইএসএফ ভোটে লড়েছিল মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে একজোট করতে। অন্য দিকে বিজেপিও মেরুকরণের অঙ্কেই এই রাজ্যে খোলাখুলিভাবে লড়াই করেছিল। যদিও দুই শিবিরের অঙ্কই কমবেশি ফ্লপ করেছে। এখন তৃণমূল সরকারের বিরোধী পক্ষ যেমন বিজেপি, তেমনি বিরোধী আইএসএফ-এর একক প্রতিনিধি নওশাদও। কিন্তু দুই পক্ষের অবস্থান দুই ভিন্ন মেরুতে। ওয়াকিবহাল মহলের অনেকের মত এই কারণেই নওশাদের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিরোধীপক্ষ। ভবিষ্যতে কোনও কমিটিতে ঠাঁই না পেলে প্রকাশ্যে মুখ খুলবেন বলেই জানালেন নওশাদ। অবশ্য তিনি মুখ খুলুন বা না খুলুন, বিষয়টি যে চিরাচরিত বিধানসভার কাঠামোটিকেই ক্ষুন্ন করবে তা বলাই যায়।